পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৮৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
৮৬


আজ ভোরবেলায় মরিয়াছে; প্রায়শ্চিত্ত হয় নাই বলিয়া, কেহ শবস্পর্শ করিতে চাহিতেছে না—এখন সেইটা করা নিতান্ত প্রয়োজন। কামিনীর মা গত ছয়মাসকাল তাহার সর্ব্বস্ব এই নিঃস্ব ব্রাহ্মণ-পরিবারের জন্য ব্যয় করিয়া ফেলিয়াছে; আর তাহারও কিছু নাই। সেই জন্যে ছেলেটিকে লইয়া আপনার কাছে আসিয়াছে।” রমেশ খানিকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “বেলা ত প্রায় দুটো বাজে। যদি প্রায়শ্চিত্ত না হয়, মড়া পড়েই থাকবে?” সরকার হাসিয়া কহিল, “উপায় কি বাবু? অশাস্তর কাজ ত আর হ’তে পারে না। আর এতে পাড়ার লোককেই বা দোষ দেবে কে, বলুন—যা হোক্‌, মড়া প’ড়ে থাক্‌বে না; যেমন ক’রে হোক, কাজটা ওদের কর্‌তেই হবে। তাই ত ভিক্ষে—হাঁ কামিনীর মা, আর কোথাও গিয়েছিলে?” ছেলেটি মুঠা খুলিয়া একটি সিকি ও চারিটি পয়সা দেখাইল। কামিনীর মা কহিল, “সিকিটি মুখুয্যেরা দিয়েচে, আর পয়সা চারটি হালদার মশাই দিয়েচেন। কিন্তু যেমন ক’রে হোক ন’সিকের কমে ত হবে না! তাই, বাবু যদি”—রমেশ তাড়াতাড়ি কহিল, “তোমরা বাড়ী যাও বাপু, আর কোথাও যেতে হবে না! আমি এখনি সমস্ত বন্দোবস্ত ক’রে, লোক পাঠিয়ে দিচ্চি।” তাদের বিদায় করিয়া দিয়া রমেশ, গোপাল সরকারের মুখের প্রতি অত্যন্ত ব্যথিত দুই চক্ষু তুলিয়া প্রশ্ন করিল,—“এমন গরীব এ গাঁয়ে আর কয়ঘর আছে, জানেন আপনি?” সরকার কহিল,—“দু’তিন ঘর আছে, বেশী