পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ


মাত্র তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মহাবিস্ময় প্রকাশ করিয়া বলিয়া উঠিল—“এই যে! আরে ইস্‌, কত বড় হয়েছিস রে? ভাল আছিস্‌?” রমা তেম্‌নি অধোমুখে দাঁড়াইয়া রহিল। হঠাৎ কথা কহিতেই পারিল না। কিন্তু রমেশ একটুখানি হাসিয়া তৎক্ষণাৎ কহিল, “চিন্‌তে পাচ্ছিস্‌ ত রে? আমি তোদের রমেশ দা!” এখনও রমা মুখ তুলিয়া চাহিতে পারিল না। কিন্তু, মৃদু-কণ্ঠে প্রশ্ন করিল, “আপনি ভাল আছেন?”

 “হাঁ ভাই, ভাল আছি। কিন্তু, আমাকে ‘আপনি’ কেন রমা?” বেণীর দিকে চাহিয়া একটুখানি মলিন হাসি হাসিয়া বলিল, “রমার সেই কথাটা আমি কোন দিন ভুল্‌তে পারিনি বড়দা! যখন মা মারা গেলেন, ও তখন ত খুব ছোট। সেই বয়সেই আমার চোখ মুছিয়ে দিয়ে বলেছিল, ‘রমেশদা, তুমি কেঁদ না, আমার মাকে আমরা দু'জনে ভাগ ক’রে নেব।’ তোর সে কথা বোধ করি মনে পড়ে না রমা, না? আচ্ছা, আমার মাকে মনে পড়ে ত?” কথাটা শুনিয়া রমার ঘাড় যেন লজ্জায় আরও ঝুঁকিয়া পড়িল। সে একটিবারও ঘাড় নাড়িয়া জানাইতে পারিল না যে, খুড়ীমাকে তাহার খুব মনে পড়ে। রমেশ বিশেষ করিয়া রমাকে উদ্দেশ করিয়াই বলিতে লাগিল—“আর ত সময় নেই, মাঝে শুধু তিনটি দিন বাকি, যা কর্‌বার ক’রে দাও ভাই, যাকে বলে একান্ত নিরাশ্রয়, আমি তাই হয়েই তোমাদের দোরগোড়ায়