পড়িয়া, অন্য কথা পাড়িল, জিজ্ঞাসা করিল,—“রাত্রে আপনি কি খান?” রমেশ হাসিয়া কহিল, “যা’ জোটে তাই খাই। আমার খেতে বস্বার আগের মুহুর্ত্ত পর্য্যন্ত কখনো খাবার কথা মনে হয় না। তাই, বামুনঠাকুরের বিবেচনার উপরেই আমাকে সন্তুষ্ট থাক্তে হয়।” রমা কহিল,—“এত বৈরাগ্য কেন?” ইহা প্রচ্ছন্ন বিদ্রূপ কিংবা সরল পরিহাস মাত্র, তাহা রমেশ ঠিক বুঝিতে পারিল না। সংক্ষেপে জবাব দিল,—“না। এ শুধু আলস্য।” “কিন্তু, পরের কাজে ত আপনার আলস্য দেখিনে?” রমেশ কহিল,—“তার কারণ আছে। পরের কাজে আলস্য কর্লে ভগবানের কাছে জবাবদিহিতে পড়্তে হয়। নিজের কাজেও হয় ত হয়, কিন্তু নিশ্চয়ই অত নয়।” রমা একটুখানি মৌন থাকিয়া কহিল,—“আপনার টাকা আছে, তাই আপনি পরের কাজে মন দিতে পারেন; কিন্তু যাদের নেই?” রমেশ বলিল,—“তাদের কথা জানিনে রমা! কেন না, টাকা থাকারও কোন পরিমাণ নেই, মন দেবারও কোন ধরাবাঁধা ওজন নেই। টাকা থাকা না থাকার হিসেব তিনিই জানেন, যিনি ইহ-পরকালের ভার নিয়েচেন।” রমা ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া কহিল,—কিন্তু, পরকালের চিন্তা কর্বার বয়স ত আপনার হয় নি। আপনি আমার চেয়ে শুধু তিন বছরের বড়।” রমেশ হাসিয়া বলিল,—তার মানে, তোমার আরও হয় নি। ভগবান্ তাই করুন, তুমি দীর্ঘজীবী হ’য়ে থাক; কিন্তু, আমি নিজের সম্বন্ধে আজই