কড়া-পাহারায় আট্কাইয়া রাখিয়াছেন। চাষীরা আজ সকাল হইতে তাঁহাদের কাছে হত্যা দিয়া পড়িয়া থাকিয়া, এইমাত্র কাঁদিতে কাঁদিতে উঠিয়া এখানে আসিয়াছে। রমেশ আর শুনিবার জন্য অপেক্ষা করিল না, দ্রুতপদে প্রস্থান করিল। এ বাড়ীতে আসিয়া যখন প্রবেশ করিল, তখন সন্ধ্যা হয় হয়। বেণী তাকিয়া ঠেস দিয়া তামাক খাইতেছেন এবং কাছে হালদার-মহাশয় বসিয়া আছেন; বোধ করি, এই কথাই হইতেছিল। রমেশ কিছুমাত্র ভূমিকা না করিয়াই কহিল,—“জলার বাঁধ আট্কে রাখ্লে ত আর চল্বে না, এখনি সেটা কাটিয়ে দিতে হবে।” বেণী হুঁকাটা হালদারের হাতে দিয়া মুখ তুলিয়া বলিলেন, “কোন্ বাঁধটা?” রমেশ উত্তেজিত হইয়াই আসিয়াছিল, ক্রুদ্ধভাবে কহিল,—“জলার বাঁধ আর একটা আছে বড়দা? না কাটালে সমস্ত গাঁয়ের ধান হেজে যাবে। জল বা’র ক’রে দেবার হুকুম দিন।” বেণী কহিলেন,—“সেই সঙ্গে দু’তিনশ টাকার মাছ বেরিয়ে যাবে, সে খবরটা রেখেচ কি? এ টাকাটা দেবে কে? চাষারা, না তুমি?” রমেশ রাগ সামলাইয়া বলিল—“চাষারা গরীব; তারা দিতে ত পার্বেই না, আর আমিই বা কেন দেব, সে ত বুঝ্তে পারিনে।” বেণী জবাব দিলেন,—“তা হ’লে আমরাই বা কেন এত লোকসান কর্তে যাব, সে ত আমিও বুঝ্তে পারিনে।” হালদারের দিকে চাহিয়া বলিলেন,—“খুড়ো, এম্নি ক’রে ভায়া আমার জমীদারী রাখবেন। ওহে রমেশ, হারামজাদারা সকাল থেকে