এতক্ষণ এইখানে পড়েই মড়াকান্না কাঁদ্ছিল। আমি সব জানি। তোমার সদরে কি দরওয়ান নেই? তার পায়ের নাগরা-জুতো নেই? যাও, ঘরে গিয়ে সেই ব্যবস্থা কর গে; জল আপনি নিকেশ হ’য়ে যাবে।” বলিয়া বেণী, হালদারের সহিত একযোগে হিঃ—হিঃ— করিয়া নিজের রসিকতায় নিজে হাসিতে লাগিলেন। রমেশের আর সহ্য হইতেছিল না, তথাপি সে প্রাণপণে নিজেকে সংবরণ করিয়া বিনীতভাবে বলিল,—“ভেবে দেখুন বড়দা, আমাদের তিন ঘরের দু’শ টাকার লোকসান বাঁচাতে গিয়ে গরীবদের সারা বছরের অন্ন মারা যাবে। যেমন ক’রে হোক্, পাঁচসাত হাজার টাকা তাদের ক্ষতি হবেই।” বেণী হাতটা উল্টাইয়া বলিলেন,—“হ’ল হ’লই। তাদের পাঁচহাজারই যাক্, আর পঞ্চাশ হাজারই যাক্, আমার গোটা সদরটা কোপালেও ত দুটো পয়সা বা’র হবে না, ভায়া, যে ও শালাদের জন্যে দু’দশ’ টাকা উড়িয়ে দিতে হবে?”
রমেশ শেষ চেষ্টা করিয়া বলিল, “এরা সারা বছর খাবে কি?” যেন ভারি হাসির কথা। বেণী একবার এপাশ, একবার ওপাশ হেলিয়া-দুলিয়া মাথা নাড়িয়া, হাসিয়া, থুথু ফেলিয়া, শেষে স্থির হইয়া কহিলেন—“খাবে কি? দেখ্বে, ব্যাটারা যে যার জমি বন্ধক রেখে আমাদের কাছেই টাকা ধার কর্তে ছুটে আস্বে। ভায়া, মাথাটা একটু ঠাণ্ডা ক’রে চল, কর্ত্তারা এম্নি করেই বাড়িয়ে গুছিয়ে এই যে এক-আধ টুক্রা