পাতা:পশ্চিম-যাত্রীর ডায়ারি.djvu/১৪৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

পশ্চিম-যাত্রীর ডায়ারি

আচ্ছন্ন করে নি। যখন আমি শিশু ছিলুম তখন আমাদের ছাদের উপর দিয়ে গয়লাপাড়ার দৃশ্য প্রতিদিনই দেখেছি; প্রতিদিনই তা সম্পূর্ণ চোখে পড়েছে, প্রতিদিনই তা ছবি ছিল। আমার দৃষ্টি আর আমার দৃষ্টির বিষয়ের মাঝখানে কোনো ভাবনা, অভ্যাসের কোনো জীর্ণতা আড়াল করে নি। আজ সেই গোয়ালপাড়া কতকটা তেমনি করে দেখতে হলে সুইজর্ল্যাণ্ডে যেতে হয়। সেখানে মন ভালো করে স্বীকার করে, হাঁ, আছে।

 শিশুর কাছে বিশ্ব খুব করে আছে, আমরা বয়স্কেরা সে কথা ভুলে যাই। এইজন্যে, শিশুকে কোনো ডিসিপ্লিনের ছাঁচে ঢালবার জন্যে যখন তাকে জগৎ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আমাদের নিজের বানানো কলের মধ্যে বন্ধ করি তখন তাকে যে কতখানি বঞ্চিত করি তা নিজের অভ্যাসদোষেই বুঝতে পারি নে। বিশ্বের প্রতি তার এই একান্ত স্বাভাবিক ঔৎসুক্যের ভিতর দিয়েই-যে তাকে শিক্ষা দিতে হবে, নিতান্ত গোঁয়ারের মতো সে কথা আমরা মানি নে। তার ঔৎসুক্যের আলো নিবিয়ে তার মনটা অন্ধকার করে দিয়ে শিক্ষার জন্যে তাকে এডুকেশন-জেলখানার দারোগার হাতে সমর্পণ করে দেওয়াই আমরা পন্থা বলে জেনেছি। বিশ্বের সঙ্গে মানুষের মনের যে স্বাভাবিক সম্বন্ধ এই উপায়ে সেটাকে কঠোর শাসনে শিশুকাল থেকেই নষ্ট ও বিকৃত করে দিই।


 ছবি বলতে আমি কী বুঝি সেই কথাটাই আর্টিস্ট্‌কে খোলসা করে বলতে চাই।

 মোহের কুয়াশায়, অভ্যাসের আবরণে, সমস্ত মন দিয়ে জগৎটাকে ‘আছে’ বলে অভ্যর্থনা করে নেবার আমরা না পাই অবকাশ, না পাই শক্তি। সেইজন্য জীবনের অধিকাংশ সময়ই

১২৮