পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবন-যুদ্ধে

হইল, একি অদ্ভুত মাতাল! যারা মদ খায়, তারা কি এমনি দেবতার মত হয়! তবে লোকে মাতালকে নিন্দা করে কেন?


 ইহার পর তিনমাস কাটিয়াছে। কুবের এখন ঘোরতর মদ্যপ।

 গঙ্গার ধারে, সেই অপূর্ব্ব মাতালের সঙ্গে তাহার রোজ দেখা হইত। মাতাল তাহাকে মদ দিত,—সে আগ্রহভরে পান করিত। পান করিয়া দেখিত, মাতালের কথা ঠিক্। মদ যেন সব জ্বালা ঘুচায়, মদ যেন দুঃখের স্মৃতির ভিতরে সুখের প্রীতি আনে। মদ শান্তির খনি।

 মাঝে মাঝে, মাতাল তাহাকে টাকা দিত। কোথা হইতে সে টাকা আনিত, কুবের তাহা জানিত না। মাতালের পরিচয় কি, তাও সে জানিতে পারিত না।

 জিজ্ঞাসা করিলে, একই উত্তর পাইত,—“আমি হতভাগা।”

 মাতালের দেওয়া টাকায়, কতক সে মদ কিনিত, কতক সরলার হাতে দিত। সরলা, সন্দিগ্ধনেত্রে তাহার দিকে চাহিয়া কহিত, “টাকা কোথা পাও?”

 “রোজ্‌গার্ ক’রে আনি।”

 “বিশ্বাস ত’ হয় না।”

 কুবের তীক্ষ্ণকণ্ঠে কহিত, “তোমার নাম সরলা রাখ্‌লে কে? তুমি গরলা।”

 “তোমারও নাম ত কাঙ্গালীচরণ হওয়া উচিত ছিল; তার বদলে এ নাম কে রাখ্‌লে?”

১০৩