নিরুত্তর ও ক্রুদ্ধ হইয়া কুবের সরিয়া পড়িত। এমনি করিয়া কিছুদিন গেল!
তারপর হঠাৎ একদিন মাতাল কোথায় অদৃশ্য হইল। তাহাকে খুঁজিতে কুবের কোন ঠাঁই বাকি রাখিল না! গঙ্গার ঘাটে বসিয়া বসিয়া সে রাত ভোর করিল। কিন্তু দিনের পর দিন যায়, মাতালের দেখা নাই; যেমন সহসা সে আসিয়াছিল, তেমনি সহসা আবার গা-ঢাকা দিল। কুবের চঞ্চল হইয়া উঠিল।
আরও কয়েকদিন কাটিল,—মাতাল আসিল না। কুবেরের সংসারে দারিদ্র্য এবং অনাহার, আবার আত্মপ্রকাশ করিল। এবারকার অভাবকষ্ট আরও অসহ্য! মদ কৈ? ভাত না পাই, ক্ষতি নাই— কিন্তু মদ, মদ কৈ? মাতাল কোথায়,—কে আমার শুক্নো গলায় মদ ঢালিয়া দিবে,—কে আমার বুক থেকে দারিদ্র্যের আগুন নিবাইয়া দিবে? আমি মদ খাব গো—সব জ্বালা ভুলিব। দাও মদ!
সরলা সামনে আসিল। বিনাইয়া-বিনাইয়া বলিতে লাগিল, “ওগো রোজগেরে মানুষ! ঘরে যে হাঁড়ি চড়্চে না! টাকা কোথা—”
“চুপ!” কুবের কর্কশকণ্ঠে বাধা দিল।
তাহার তেমন স্বর সরলা আর কখনও শুনে নাই। থতমত খাইয়া যে স্বামীর মুখের দিকে চাহিল।
“সরে যাও,—সরে যাও বলচি! সর্লে না? দেখবে—”
কুবের দুইহাতে ঘুষি পাকাইল। সরলা আর সেখানে দাঁড়াইতে সাহস করিল না।
মদ্! মদ! মদ্! ব্যাস্— কিছু আর চাই না আমি! খালি ঢাল্ব