পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

 খোকাকে নামাইয়া দিয়া এলমেল পায়ে কুবের ঘর হইতে বাহির হইয়া রাস্তায় গেল।

 রাস্তার মোড়ে মদের দোকান। সেখানে মাতালদের আনন্দোৎসব হইতেছে। কেহ মাটির গেলাসে মদ নিয়া নাচিতেছে, কেহ ভূতলে লম্বা হইয়া পড়িয়া গান সুরু করিয়া দিয়াছে, কেহ হাসিতে হাসিতে হঠাৎ অকারণে কাঁদিয়া ফেলিতেছে, কেহ-বা আকস্মিক ভক্তিরসে আপ্লুত হইয়া বিকটস্বরে ‘তারা’ ‘তারা’ বলিয়া চ্যাঁচাইয়া উঠিতেছে।

 কুবের লোলুপ দৃষ্টিতে রাস্তায় দাঁড়াইয়া সকলের মদ্যপান দেখিতে লাগিল। শেষটা আর থাকিতে পারিল না, আস্তে-আস্তে দোকানের ভিতরে ঢুকিয়া ‘শুঁড়ি’কে গিয়া বলিল, “হ্যাঁগো, একটু মদ দেবে?”

 “পয়সা?”

 “আজকের দিনটা ধারে দাও, পয়সা কাল পাবে।”

 “না, না—দোকানের দরজায় কি লেখা আছে, দেখতে পাচ্ছিস্ না? ‘ধারে বিক্রয় নিষেধ’—ঐ দ্যাখ্‌!”

 “একটুখানি দাও না, পায়ে পড়ি!”

 “আরে মোলো, কোত্থেকে এ আপদ এসে জুট্‌ল! যা যা—মদ খেতে পয়সা লাগে, পয়সা আন্‌গে যা!”

 শুঁড়ির কথার প্রতিধ্বনি করিয়া ঘরসুদ্ধ মাতাল একসঙ্গে বলিয়া উঠিল, “যা, যা—মদ খেতে পয়সা লাগে, পয়সা আন্‌গে যা।”

 কুবের দোকান হইতে বাহির হইল। একবার এ রাস্তা, একবার

১০৬