কুবের একটা গলির ভিতরে ঢুকিল। চোখের জল মুছিতে-মুছিতে অসাড় পায়ে একদিকে ধীরে ধীরে আপনমনে চলিয়া গেল।
ছ
মানুষের প্রাণ ত! সারাদিন পেটে ভাত নাই, বুকের ভিতরে অশান্তির আগুন ধিকি ধিকি জ্বলিতেছে,— কত আর সওয়া যায়? দুপা হাঁটিয়াই কুবেরের দেহের ভিতর কেমন করিতে লাগিল,—মস্তিষ্ক যেন অগ্নিপিণ্ড!
একটা বুকভাঙ্গা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়| সে চলিতে-চলিতে দাঁড়াইয়া পড়িল; তাহার মনে হইতে লাগিল, পায়ের তলা থেকে মাটী যেন সরিয়া যাইতেছে, বুকের ভিতরে প্রাণ যেন মূর্চ্ছিত হইয়া পড়িতেছে। তাড়াতাড়ি একটা বাড়ীর দেওয়ালে গা-ঠেসান্ দিয়া দাঁড়াইয়া, আপনার কাতর চোখদুটি মার্জ্জনা করিল। মনে-মনে বলিল, “আর যেন চোখ্ না খুল্তে হয়,— আর যেন চোখ্ না খুল্তে হয়!”
কিন্তু, মৃত্যু কোথায়? অনাদৃত হতভাগ্য মরে না! কুবেরও মরিল না! তেমনি করিয়া দেওয়ালে ভর্ দিয়া দাঁড়াইয়া রহিল—কতকক্ষণ, সে জানে না।
হঠাৎ কচি-কচি গলায়-কে মধুর স্বরে ডাকিল, “ভিখিলি অ ভিখিলি!”
কুবের, ধীরে-ধীরে চক্ষু মেলিল। দেখিল, তার পাশেই একটি বাড়ীর দরজা। সেখানে, চৌকাঠের উপরে দাঁড়াইয়া, কোঁক্ড়া-চুলে ঢেউ খেলাইয়া গোলাপ ফুলের মত একটি ছোট্ট মেয়ে।
তাহাকে চোখ চাহিতে দেখিয়া, মেয়েটি তাহার কাছে আসিয়া