পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

 কুবেরের শিথিল মুষ্টি হইতে হারছড়া পথের উপরে পড়িয়া গেল! এবং সেইসঙ্গে সে’ও একান্ত অবসন্ন হইয়া, মরণাহতের মত মাটির উপরে গড়াইয়া পড়িল। তাহার চেতনা লুপ্ত হইল।

* * * *

 যখন তাহার জ্ঞান হইল দেখিল, তাহাকে ঘিরিয়া অনেক লোক দাঁড়াইয়া আছে। প্রথমটা সে, কিছুই বুঝিতে পারিল না। ভাবিল, স্বপ্ন দেখিতেছি।

 হঠাৎ একজন বলিল, “আবার মট্‌কা মেরে পড়ে আছেন! ওঠ্‌ ব্যাটা ওঠ,!”

 সে আস্তে-আস্তে উঠিয়া বসিল। একি! এরা কারা?

 আর একজন বলিল, “ব্যাটা চোর, মেয়েটাকে আর একটু হ’লে মেরে ফেলেছিল আর-কি! ভাগ্যে আমি দূর থেকে দেখ্‌তে পেয়ে ছুটে এলুম! পাহারাওলাজী, নিয়ে যাও ব্যাটাকে থানায়।”

 পাহারাওয়ালা সেইখানেই দাঁড়াইয়াছিল। সে অগ্রসর হইয়া কুবেরকে রুলের এক গুঁতা দিয়া কহিল, “শালা বদ্‌মাস্! উঠ্‌ শালা উঠ্‌।”

 এক বৎসরের কারাবাস! সেযে কি যন্ত্রণা! স্বাধীন তাহা বুঝিবে না। আর, বুঝিবে না বলিয়া অভাগার সেই দৈনন্দিন যাতনাকাহিনী এখানে বলিয়া লাভ নাই। যাঁহার হৃদয় আছে, তিনি বুঝিয়া লউন।

 এক বৎসর পরে, একদিন কুবের হঠাৎ দেখিল, চির-পরিচিত, দুঃখ সুখের স্মৃতি-দিয়া-ঘেরা, বিশাল বাহ্যজগৎ, আবার তাহার মস্তকে অনাহত

১১২