পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

আমার স্ত্রী আছে, আমার রক্ত দিয়ে গড়া পুলকের দুলালগুলি আছে! আহা, বাছারা না জানি “বাবা, বাবা” বলিয়া কত ডাকিয়াছে—কত কাঁদিয়াছে! ওরে আনন্দের কণা, মাণিকের টুক্‌রা, ওরে, তোদের কি আমি ভুলিতে পারি?—এই যে, এখনি গিয়া কোলে করিব, চুমা খাইব। আর সরলা? এতদিনের অদর্শনে নিশ্চয়ই তাহার মুখরতা দূর হইয়াছে।

 আচ্ছা, তারপর? তারপর আর কি? ‘জেলার’ সাহেব আমাকে ভালবাসিতেন। আসিবার সময়ে আমার দুঃখের কথা শুনিয়া আমাকে কুড়িটা টাকা দিয়াছেন। আপাতত, ইহাতেই ত কিছুদিন চলিবে। ইহার ভিতরে একটা কাজের যোগাড় নিশ্চয়ই করিয়া লইব। এত কষ্ট পাইলাম, ভগবান্ এখনও কি মুখ তুলিয়া চাহিবেন না? আমি ত’ তাঁকে এখনও ভুলি নাই!

 আমি চোর, আমায় কে কাজ দিবে? আমি চোর? কখনো না! ভগবান্ সাক্ষী, আমি চুরি করি নাই! বেশ,—কাজ না পাই, এবার দিনমজুরী করিয়া খাইব!

 এমনি নানা কথা ভাবিতে ভাবিতে, সে আপনার বাসাবাড়ীতে গিয়া উপস্থিত হইল। কিন্তু, কোথায় সরলা,— কোথায় ছেলেমেয়ে? দরজা যে বাহির হইতে বন্ধ! পাড়ার অনেকের কাছে সে খোঁজ নিল। কিন্তু সরলার সন্ধান কেহ দিতে পারিল না।

 ওহো,—ঠিক্! সরলা নিশ্চয় তার ভায়ের কাছে গিয়াছে! এখানে একলাটি সে থাকিবে কেমন করিয়া? কে তাদের সংসার চালাইবে? হ্যাঁ, সেই ঠিককথা। সরলা তার ভায়ের কাছে গিয়াছে।

১১৪