পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

চাঁটি,—তবে ত’ ফুর্ত্তি জম্‌বে। চল বাপসকল, এ আলুনি নেশায় যার খুসি হয়, থাকুক,—এর মধ্যে আমি নেই ভাই!”

 সকলের আগে কুবের দাঁড়াইয়া উঠিল; কহিল, “ঠিক্ বলেচ, চল।”

 তাহারা একটা জঘন্য পল্লীর ভিতরে প্রবেশ করিল।

 দুপাশে সারি-সারি খোলার ঘর। রোয়াকের উপরে কতকগুলা কুৎসিত স্ত্রীলোক বসিয়া আছে। তাহাদের মুখে খড়ি মাখা। রাত্‌জাগা বসা-চোখের আসেপাশে কাজলআঁকা। তাহাদের স্নানদৃষ্টিতে কামের গন্ধমাত্র নাই,—আছে সুধু অভাবের মৌন হাহাকার, দারিদ্র্যের নীরব যাতনা! অন্ধকারে বসিয়া, হাঁটুর উপরে মলিন মুখ রাখিয়া, দুরন্ত শীতের কন্‌কনে হাওয়ায় তাহারা থর্ থর্ করিয়া কাঁপিয়া মরিতেছে।

 মাতালদের সঙ্গে কুবের গলির ভিতরে ঢুকিল। মাতালেরা সবাই উল্লসিত, কিন্তু কুবেরের মুখে কোনরূপ ভাবাবেশ নাই। তুফানের টানে সে তখন হালভাঙ্গা নৌকার মত। তাহার কোন ভাবনা নাই!

 সে চলিয়াছে, চলিয়াছে,—সংসারস্রোতে ভাসিয়া চলিয়াছে, কোথায় গিয়া, কোন্‌ কূলে আছাড়িয়া তাহার ভাসিয়া চলার অবসান—সে তা জানে না, জানিতে চাহে না!

 অন্ধকারের ভিতর হইতে আচম্‌কা একটা স্ত্রীলোক বাহির হইয়া আসিয়া তাহার হাত ধরিয়া টানিল। মিনতি করিয়া বলিল, “আমার ঘরে আসবে গা?”

১১৬