পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অন্ধ

কিন্তু বাবাত, এতগুলো টাকা চোখে দেখ্‌তে পাবেন!—ব্যস, তাহলেই হল, তাহলেই হল! তাঁকে টাকা দ্যাখাবার জন্যে আমাকে বিয়ে কর্ত্তে হবে।

 মা বড় অবুঝ। স্ত্রীলোক কিনা! বল্লেন, “তবু ছেলেটার দিকেও ত’ একবার তাকাতে হয়!”

 বাবা রেগে বল্লেন, “ভগবান্ যাকে মেরেচেন, আগে তার দিকে তাকানে। উচিত! জান সে অন্ধ!”

 হাঃ হাঃ—বাবার কি ধর্ম্মজ্ঞান! কিন্তু বাবা আমার এ সহজ কথাটা ইচ্ছে করেই বুঝলেন না যে, ভগবান্ যাকে মেরেচেন, দুনিয়ায় আমি ছাড়া তার দিকে তাকাবার জন্যে আরও ঢের লোক আছে। এ বাঙ্গলা যে দয়ায় ভরা! পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে পারলে এখানে অন্ধ হলেও বিয়ে বন্ধ থাকে না; বাঙ্গালী বরের বাপ টাকা পেলে চিতা থেকেও মরা মেয়েকে ছাঁদ্‌নাতলায় টেনে নিয়ে যেতে পারে!

 বাবা আবার বল্লেন, “আমার যদি বয়স থাক্‌তো, এ মেয়েকে তাহলে আমিই বিয়ে—”

 মা তাড়াতাড়ি বাধা দিয়ে বল্লেন, “চুপ কর, চুপ কর! বল্‌চ তুমি!”

 বাবা ঠিক্‌ই বল্‌চেন। দুবেলা সন্ধ্যাহ্নিক করেন, মাথায় টিকি, গলায় পৈতে রাখেন, ভগবান্ যাকে মেরেচেন তার দিকে তিনি তাকাবেন না?

 হাঃ হাঃ?—

 আমারও, —তাতে আপত্তি ছিল না।

১১৯