পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অন্ধ

পড়্‌ল। তারপর, প্রাণপণে আমার বুক দুহাতে জড়িয়ে ধরে সে থির হয়ে পড়ে রৈল।

* * *

 প্রতঃসন্ধ্যার স্তব্ধ চিতা যখন পূর্ব্বমেঘে জ্বলে উঠল, তখন তার আলো বেণুর অন্ধনেত্রে, কৃষ্ণদেহের উপরে এসে পড়্‌ল।

 অন্ধ বেণু—কালো বেণু!

 তখনও সে আমার বুকের উপরে তেমনি নিসাড় হয়ে পড়েছিল। ভোরের আধা আলোয়, আধা ছায়ায় বেণুর অন্ধ চোখ ও কালো দেহের দিকে একবার চেয়ে দেখ্‌লাম। তেমন করে আগে কখন’ তাকে দেখি-নি, পরেও কখন’ দেখ্‌বার সময় পাইনি।

 তাব চোখের পাতাদুটির উপরে আস্তে-আস্তে হাত বুলিয়ে দিলাম। পদ্মপুটে বন্দী বৃষ্টিবিন্দু নাড়া পেলে যেমন ঝরে পড়ে, বেণুর চোখ থেকেও তেমনি ঝর-ঝর করে আবার অশ্রু ঝরে পড়্‌ল।

 “বেণু!”

 “ওগো নাগো না, আর অমন কর্‌ব না!”

 “কি কর্‌বে না?”

 “আর কাঁদ্‌ব না!”

 আমার অবরুদ্ধ কণ্ঠ ভেদ করে বলে উঠলুম—“না,—কাঁদ তুমি। আমিও কাঁদি।”

 তারপর? তারপর আমার জ্বর, বসন্তরোগে দাঁড়াল। বসন্ত

১২৫