পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সোণার চুড়ী

 “খুচ্‌রো খরচ আছে।”

 “যথা—?”

 “সে কি আর হিসেব করে বলা যায়? হঠাৎ আপদ্‌-বিপদ্, কোথাও যাওয়া-আসা, আত্মীয়-কুটুম্বিতে (রাজেন্দ্র হতাশভাবে আড়্‌, হইয়া মাদুরে শুইয়া পড়িল) নাপিত-নাপ্‌তিনী, ছেলের স্কুলের মাহিনা—এমন আরো কত কি!”

 শুইয়া-শুইয়া দুইচোখ বুঁজিয়া রাজেন্দ্র বলিল, “ওগো, একটা হিসেব ভুলেছ।”

 “কি?”

 “অর্দ্ধেক রাজত্ব-কেনার কথাটা। এ মাসে সেটাও ত’ অবিশ্যি করে কেনা চাই?”

 অমলা স্বামীর মুখের দিকে চাহিল। তারপর হাসিয়া বলিল, “চাই বই কি! জ্যোতিষ ঠাকুর বলেছিল, তুমি নিশ্চয় রাজা হবে—মনে নেই? রাজত্ব নইলে চল্‌বে কেন?”

 রাজেন্দ্র উঠিয়া বসিয়া মুখভার করিয়া বলিল, “তোমার হাসি আস্‌চে অমলা? আমার ত’ কান্না পাচ্চে!”

 অমলা উচ্চহাস্য করিয়া বলিল, “এখনি কান্না? এখনো যে চাল আর কয়লার ফর্দ্দ বাকী আছে!”

 রাজেন্দ্র গুম্ হইয়া বসিয়া রহিল। মাঝেমাঝে ঘরের এদিকেওদিকে চাহিয়া দেখিতে লাগিল। যে দিকে চায়, সেইদিকেই সে এক একটা নূতন অভাবের চিহ্ন দেখে, আর তার বুকটা ধড়াস্ করিয়া ওঠে। ঐ ও-দিকের কুলঙ্গিতে একটা চিম্‌নিহীন ল্যাম্প্‌ রহিয়াছে; চিম্‌নিটা

১২৯