অন্তসূর্য্যের স্নিগ্ধ আলো অঙ্গে মাখিয়া দীপ্ত-নীল আকাশের তলার একঝাঁক পায়রা একছড়া উড়ন্ত যুঁইফুলের মালার মত ঘুরিয়া ঘুরিয়া উড়িয়া যাইতেছিল।
ছাদে কাপড় তুলিতে গিয়া, অমলা সেইদিকে তাকাইয়া দাঁড়াইয়াছিল।
হঠাৎ অমলার পায়ের কাছে সশব্দে কি-একটা জিনিষ আসিয়া পড়িল। অমলা, চমকিয়া দেখিল, একটা ঢিল। তার সঙ্গে খানিকটা সূতা বাঁধা। সূতার ডগায় একখানা কাগজঃ-
এর মানে কি?
অমলা হে’ট হইয়া কাগজখানা তুলিয়া লইল। তাহাতে ভুর্-ভুরে এসেন্সের গন্ধ। কাগজের ভাঁজ খুলিয়া অমলা দেখিল, ভিতরে পরিষ্কার হাতের অক্ষরে কয়ছত্র লেখাঃ-
“তোমার জন্য আমি পাগল। আমার দিকে মুখ তুলে তাকালে তুমি যা চাও তাই দেব। গরিব কেরাণী তোমার কদর বুঝ্বে না। দয়া করো। নইলে আমি বাঁচ্ব না।”
অমলা, চিঠি পড়িয়া মনে-মনে বলিল, “তোমার পক্ষে মরাই ভাল।” এ চিঠি কার? কে লিখিতেছে? পত্রে কাহারও নাম ছিল না। আমার পায়ের কাছে কাগজখানা আসিয়া পড়িল কেন? তবে কি-অমলা একপলকে সব বুঝিল।
গোধূলির আলো তার গৌরবাইকে কাঁচা সোণার মত উজ্জ্বল করিয়া তুলিয়াছিল। অমলার চোক তার উপরে পড়িল। সে হাতদুটি কেমন নধর, কেমন নিটোল!