বলে বড়মানুষ! বাসাবাড়ী, তবু লোকজন চারিদিকে যেন রৈ-রৈ করছে! গাড়ী-ঘোড়া জিনিষপত্তর দেখ্লে চোখ জুড়িয়ে যায়! শুনলে অবাক্ হবে দিদি, ওরা সব রূপোর বাসনে ‘সরে’।”
অমলা আনমনা হইয়া বলিল, “তা হবে না কেন; বড়লোকের ভিন্গোত্তর! একি আর আমরা, যে ছেঁড়া ন্যাক্ড়াতেই জীবন কেটে যাবে?”
ঝী দরদ দেখাইয়া বলিল, “তা” সত্যি দিদিমণি! তোমার অমন প্রতিমের মত রূপ, অমন নিটোল গড়ন, ওতে কি দুখানা সোণাদানা না পর্লে সাজন্ত হয়?”
“কোথায় পাব বাছা, সোণাদানা ত’ পথের ধূলো নয়!”
“কেন, দাদাবাবুকে বল্তে পার না?”
“বলে কি হবে? খেতে-পর্তেই কুলোয় না, তা আবার সোণাদানা!”
“হ্যাঁ দিদিমণি, দাদাবাবু তোমায় আদর-আয়িত্তি করে ত?”
অমলা কৌতুকভরে হাসিয়া বলিল,
“আলুনি আদর ঢ্যাঁপের খৈ-
আদরের কথা কার কাছে কই!”
বলিয়াই হঠাৎ গম্ভীর হইয়া কহিল, “নে, রুটি ব্যাল্—উনুন যে কামাই যাচ্ছে!”
কিছুক্ষণ কেহই কোন কথা কহিল না। রুটি-বেলা শেষ হইয়া গেলে পর, বেলুন ও চাকীখানা সরাইয়া ঝী অমলার মুখের ভাবখানা খানিকক্ষণ নীরবে চাহিয়া-চাহিয়া দেখিতে লাগিল। তারপর মৃদুস্বরে বলিল, “পুরুষগুলা কি-রকম বে-আক্কেল দিদিমণি!”