অমলা চাটু হইতে মুখ না তুলিয়াই বলিল, “পুরুষগুলো আবার কে?”
“এই ও-বাড়ীর জমিদারের ছেলে গো, এতক্ষণ যার কথা হচ্চিল!”
“কেন, সে কি করেচে?”
“বল্ব?”
“বল্।”
“আমরা গরীবমানুষ, গতর খাটিয়ে খাই—কারুর সাতেও থাকি না, পাঁচেও থাকি না। বল্লে শেষটা ত আমার ওপরে রাগ কর্বে না ঠাকুরু?”
অমলা চকিতে ফিরিয়া, ঝীয়ের দিকে তীক্ষ্ণনেত্রে চাহিল। বলিল, “বুঝেচি। কি বলেচে, সব খুলে বল্।”
অমলার কণ্ঠস্বর কঠোর!
ঝী থতমত খাইয়া গেল। সে যা বলিতে যাইতেছি তা আবার চাপা দিবার চেষ্টা করিল, কিন্তু পারিল না। অমলার দৃষ্টি যেন তার মনের কথাগুলাকে হিড়্হিড়্ করিয়া টানিয়া তাহার জিভের ডগায় আনিয়া দিল। কলের পুতুলের মত সে বলিয়া গেল, “ও-বাড়ীর বাবু কাল আমাকে ডেকে বল্লে, ‘ঝী, ঐ সামনের বাড়ীর বৌ’কে তুমি যদি আমার কথা জানিয়ে আস্তে পার, আমি তোমাকে এক-শো টাকা দেব।’—আমায় বললে, আমি কি করব দিদি?”
অমলা কিছু বলিল না। উত্তেজিতভাবে ফিরিয়া, সে উনানে কড়া চড়াইয়া দিতে গেল; কিন্তু তাহার হাত ফস্কাইয়া কড়াখানা ঘিয়ের কেঁড়ের উপরে পড়িল। কেঁড়েটাও সশব্দে উল্টাইয়া গেল। সেই শব্দে উপর হইতে রাজেন্দ্র নামিয়া আসিল। মেঝেতে তখন ঘি গড়াইতেছে। রাজেন্দ্র