পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সোণার চুড়ী

বিরক্তস্বরে বলিল, “কাজ যত না হোক্, অকাজ কর্‌তে তোমরা খুব মজবুৎ! বেশ যাহোক্!”

 উত্তেজিত অমলা আরও উত্তেজিত হইয়া বলিল, “পুড়ে মর্‌তে মর্‌তে বেঁচে গেলুম, আর তুমি কিনা উল্টে ক্যাঁট্‌ক্যাঁট্‌ করে কথা শুনিয়ে দিতে এলে?”

 রাজেন্দ্র চটিয়া উঠিয়া বলিল, “কথা শোনাব না কেন! অতটা ঘি যে খাম্‌কা নষ্ট হ’ল, এই মাগ্যির বাজারে সেটা কোথা থেকে আসে শুনি?”

 অমলার মন সেদিন হঠাৎ আগুন হইয়া উঠিল। স্বামীর অন্যায় ও নিষ্ঠুর কথা সে কিছুতেই মুখ বুজিয়া সহিতে পারিল না। উঠিয়া দাঁড়াইয়া বলিল, “আমি কি সাধ করে তোমার লোক্‌সান করেছি? খেটে-খেটে দেহ ক্ষয়ে গেল, বল্‌তে তোমার লজ্জা হচ্চে না?”

 রাজেন্দ্র তখন সবে আপীশ থেকে ফিরিয়াছে, তাহার মেজাজটাও বিলক্ষণ চড়া ছিল। সেও মহা থাপ্পা হইয়া বলিল, “বড় যে লম্বা-লম্বা কথা হচ্চে, ওসব আমার বাড়ীতে বসে হবে না—বুঝলে? এটা তোমার বাপের বাড়ী হলে, আমি তোমার গোলাম হয়ে থাক্‌তুম।”

 “কি! তুমি আমার বাপ তুল্লে? এতবড়”-

 অমলা আর কথা শেষ করিতে পারিল না। ঝড়ের মত সেখান হইতে চলিয়া গিয়া আপনার ঘরের ভিতরে ঢুকিয়া হুম্ করিয়া দরজাটা বন্ধ করিয়া দিল।

 অমলার চোখ সুমুখের বাড়ীর উপরে পড়িল।

১৩৯