কিন্তু অমলার মুখ একেবারে ভাবশূন্য, সে একেবারে চুপচাপ।
“সুধুকি তাই দিদি? আবার দেখনা কি সব পাঠিয়েচে!” বলিয়া ঝী তাহার কাপড়ের ভিতর হইতে একটি মখ্মলের বাক্স বাহির করিল। বাক্সের ডালা খুলিয়া আবার বলিল, “দেখ্চ দিদি, কেমন সব ভারি ভারি গয়না! এই দেখ চন্দ্রহার, এই দেখ তাগা, বালা,—আর এগুলো কি দেখ্চ? পালিসপাতার চুড়ী! আরো কত গয়না গড়্তে দিয়েচে,— ভাল সাঁচ্চা সল্মা-চুম্কীর কাপড়ের ফর্মাজ দিয়েছে! কিগো! অমন ক’রে বসে রইলে যে? একবার তবুও জিনিষগুলো নেড়েচেড়ে দেখ!”
অমলা নড়িল না। সে গহনার বাক্সের দিকে স্থিরনেত্রে তাকাইয়া কাঠের মত বসিয়া রহিল।
জ
ঝী যখন অমলাকে ঘরের ভিতরে একলা রাখিয়া চলিয়া গেল, তখনও সে তেমনি আড়ষ্ট হইয়া রহিল।
তাহার সাম্নে সেই গহনার বাক্স। বাক্সের ডালা খোলা; ভিতর হইতে গহনাগুলা বর্ষার ম্লান আলোতেও ঝক্মক্ করিয়া উঠিতেছিল। অমলা নিষ্পলকনেত্রে সেইদিকে তাকাইয়া রহিল।
এ গহনা তাহার! অমলার সর্ব্বশরীর শিহরিয়া উঠিল। কিন্তু কে দান করিতেছে, আর—আর, কেন এ দান? সে-কথা ভাবিবামাত্র তাহার বুক ধড়াস্ করিয়া উঠিল।
আস্তে-আস্তে সে হারছড়া কম্পিত হস্তে তুলিয়া নিল। এ হার কত ভরির, কত দামের?—কে জানে! হারছড়া গলায় পরিলে কেমন-মানায়