পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

দু-পায়ে দলে-পিষে দিয়ে যাও—তোমার পায়ের তলায় পড়ে আমি ধূলোর মত গুঁড়ো হয়ে মরে যাই।”

 রাজেন্দ্র অমলার কথার আসল মানে আদোপেই বুঝিতে পারিল না। বোকা বনিয়া, মাথা চুল্‌কাইতে চুল্‌কাইতে বলিল, “অমল, তুমি কি বল্‌চ?’

 অমলা বুঝিল, সে যদি আপনার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিতে চায়, তাহা হইলে আর লুকাচুরি করিলে চলিবে না। এটা বুঝিয়া সে শক্ত হইয়া উঠিয়া বসিল। তারপর চোখের জল মুছিয়া স্বামীর দিকে মুখ তুলিয়া বলিল, “আমার আর চুড়ী চাই না।”

 “অ্যাঁ—সে কি?”

 “হ্যাঁ,—আমার গয়না আছে।”

 “কি?—কি?”—

 “আমার গয়না আছে। এই দেখ।”—বলিয়াই অমলা তাহার কাপড়ের ভিতর হইতে গয়নার বাক্সটা বাহির করিয়া দুম্ করিয়া মেঝের উপরে ছুঁড়িয়া ফলিয়া দিল। গহনাগুলা চারিদিকে ছিট্‌কাইয়া পড়িল।

 রাজেন্দ্র প্রথমটা হতভম্বের মত গহনাগুলার দিকে চাহিয়া রহিল। তারপর জড়িতস্বরে কহিল, “এ সব কি অমলা? গয়না তুমি কোথা থেকে পেলে?”

 অমলা সহজস্বরে বলিল, “একজন দিয়েচে।”

 “দিয়েচে!—কে?”

 “ঐ চিঠিখানা পড়ে দেখ।”

 গহনাদাতার পত্রখানা তুলিয়া নিয়া রাজেন্দ্র বিস্ফারিত নেত্রে তাহা পাঠ করিল। তারপর জিজ্ঞাসা করিল, “এ চিঠি লিখ্‌লে কে?”

১৫০