পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সোণার চুড়ী

 অমলা নিজেই বুঝিতে পারিল না, তার এত জোর, এত সাহস কি করিয়া আসিল? সে উঠিয়া দাঁড়াইয়া স্পষ্টস্বরে বলিল, “যে চিঠি লিখেচে, তাকে দেখ্‌বে?”

 বিবর্ণ ও চিন্তিত মুখে রাজেন্দ্র বলিল, “হুঁ।”

 জানালার কাছে আগাইয়া গিয়া অমলা বলিল, “এদিকে এস।”

 সুমুখের বাড়ীর জানালায় সেই হিংস্র চক্ষুদুটো জ্বলন্ত অগ্নির মত তেমনি সজাগ হইয়া ছিল। অমলাকে দেখিবামাত্র সে চোখ উজ্জ্বল হইয়া উঠিতেছিল, কিন্তু অমলার পাশে রাজেন্দ্রকে দেখিয়াই হঠাৎ আবার কুঞ্চিতফণা সর্পের মতই নত হইয়া পড়িল।

 রাজেন্দ্র এতক্ষণে সব ব্যাপারটা আন্দাজ করিতে পারিল! সে স্তব্ধ হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল।

* * * *

 অমলা ঘরের মেঝে হইতে একে-একে গহনাগুলা কুড়াইয়া আনিয়া, জানালা গলাইয়া অবজ্ঞাভরে রাস্তার উপরে ফেলিয়া দিল। সয়তানের চোখ দেখিয়া আজ সে একটুও ভয় পাইল না ৷

 তাহার অশান্ত বুকটা যেন এতক্ষণ ভারি পাথর হইয়া ছিল; এখন সে শান্তির নিশ্বাস ফেলিয়া বাঁচিল,—তাহার মনের সকল ময়লা একেবারে যেন পরিষ্কার হইয়া গেল। * * *

 গৃহতলে হাঁটু গাড়িয়া, সে স্বামীর দেওয়া সোণার চুড়ী পরিতে বসিল।

ইতি

১৫১