পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

বহুভাগে বিভক্ত। স্প্রিংয়ের দরজা ঠেলিয়া সে আপনাদের বিভাগে ঢুকিল।

 সারি সারি টেবিল। প্রতি টেবিলের দুদিকে দুখানা করিয়া চেয়ার। একদিকে বড়বাবুর নিজস্ব একটা মেজ্‌। চারিদিকে কাঠের ‘তাক্’— তাহাতে বড় বড় বাঁধানো খাতা। মাথার উপরে বৈদ্যুতিক পাখা, ‘বিজ্লীর আলো’। আয়োজনের কোন ত্রুটি নাই। ঠিক যেন বন্দী পাখীর জন্য সোনার ‘পিঁজরা’!

 এখনও দশটা বাজে নাই। কেরাণীরা, কেহ টেবিলের উপরে বসিয়া, কেহ দাঁড়াইয়া, দলে দলে গল্প করিতেছে, হাসিতেছে!

 হঠাৎ জুতার মশ্‌মশ শব্দ হইল।

 “ওহে সায়েব, সায়েব!”

 পলকে কি পরিবর্ত্তন! সবাই যে যার আসনে আসীন, সামনে খাতা খোলা, চোখে জ্বলন্ত মনোযোগ, আর হাতে চলন্ত কলম! সাহেব কি একটা কাজে আসিয়াছিল; কাজ সারিয়া তখনই চলিয়া গেল। অমনি সকলের হাত হইতে কলন খসিল, দৃষ্টি অপাঙ্গে ফিরিল, একজন অর্দ্ধোচ্চ কণ্ঠে কহিল, “গেছে?”

 আর একজন দরজার ফাঁক্‌ দিয়া উঁকি মারিয়া দেখিয়া বলিল, “হুঁ।”

 অমনি যতীনচন্দ্র একটি গান ধরিয়া দিল। আর একজন ঘাড় নাড়িয়া তবলা অভাবে টেবিল চাপ্‌ড়াইয়া তাল দিতে লাগিল।

 এবার বড়বাবু আসিতেছেন। আবার সব চুপ্‌চাপ।

 কেরাণীদের অসম্পূর্ণ ছবি এইরূপ। মানুষ যে কত হীন কত কপট হইতে পারে, বুকে তুষানল জ্বালিয়া মুখে কত যে হাসিতে পারে, তা