পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

 ধীরে ধীরে উপরে উঠিয়া, ঘরে ঢুকিতে ঢুকিতে সে ডাকিল, “সুরো!”

 থোকাকে কোলে করিয়া, সুরবালা মাদুরের উপরে বসিয়াছিল। প্রিয়নাথের সাড়া পাইয়া মুখ তুলিয়া চাপা আওয়াজে বলিল, “চুপ! চুপ! খোকার ভারি জ্বর!”

 প্রিয়নাথ উদ্বেগের সহিত বলিল, “জ্বর!”

 “হ্যাঁ। গা যেন পুড়ে যাচ্ছে। এখন একটু ঘুমিয়েচে, অত জোরে কথা কোয়ো না, এখনি জেগে উঠবে”

 প্রিয়নাথ, — শুষ্কমুখে খোকার গায়ে হাত দিয়া দেখিল,—গা যেন আগুন! তার সারাদিনের কম্মক্লান্ত মস্তিষ্ক তখন উত্তপ্ত। বাড়ীতে আসিয়া কোথায় একটু বসিয়া জিরাইবে, দুটা কথা কহিবে, না, আবার এই হাঙ্গাম! সে আর সহ্য করিতে পারিল না, বিরক্তিপূর্ণ-কণ্ঠে কহিল, “না, আর অসহ্য হয়ে উঠেছে, রোজ় একটা না একটা লেগে আছেই, তার চেয়ে একেবারে মরুক্ না কেন, হাড়ে বাতাস লাগে!”

 সুরবালা তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিল, “সাঠ ষাঠ, অমন সর্ব্বনেশে কথা কি করে তোমার মুখ দিয়ে বেরুল গা?”

 প্রিয়নাথ বুঝিল, রাগের মাথায় সে একটা ভারি অন্যায় কথা বলিয়া ফেলিয়াছে। অনুতপ্ত হইয়া তখনই সে খোকাকে কোলে করিয়া স্তব্ধভাবে বসিয়া পড়িল।

 রাত্রে খোকার জ্বর ভয়ানক বাড়িয়া উঠিল। জ্বরের ‘ধমকে’ সারা-

১০