পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্মৃতির শ্মশানে

 একটু বিশ্রামের জন্য সুখেন্দু, তাহার জন্য নির্দ্দিষ্ট ঘরে প্রবেশ করিল।

 ঘরটি ছোট। জানালার ধারে একটি টেবিল, দুখানি চেয়ার ও একটি ছোট ‘বুক্‌কেশ’ সাজান রহিয়াছে। আর একদিকে একখানি ‘ক্যাম্প্‌’ খাটে পালকের মত সাদা বিছানা পাতা।,

 সুখেন্দু একেবারে শয্যায় গিয়া আশ্রয়গ্রহণ করিল। এবং শুইয়া শুইয়া ভাবিতে লাগিল ৷

 সেই পুরাতন কথা!

 সরযূর পিতা দেবেন্দ্রবাবু সরকারি কাজ লইয়া তাহাদের দেশে বদ্ল হইয়াছিলেন। দেবেন্দ্রবাবুর বাড়ী ছিল তাহাদের বাড়ীর পাশে।

 সরযূ তখন ছোট,—আট বছরের মেয়ে। সে তখন বালক। দুইজনে সে যে কি ভাব ছিল! সরযূ দিনরাত তাহাদেরই বাড়ীতে থাকিত। সরযুকে ছাড়িয়া সে থাকিত পারিত না, তাহাকে ছাড়িয়া সরযূ থাকিতে পারিত না। একজন খাবার পাইলে অন্যকে ভাগ না দিয়া একা খাইত না।

 বাদলে সেই অকারণে মাঠে মাঠে দুজনের জলে ভেজা! নালার জলে সেই কাগজের নৌকা-ভাসান, তরপর কার নৌকা কতদূরে গেল বলিয়া সেই তর্ক করা! সন্ধ্যাবেলায় ঠাকুরমার কোলে শুইয়া সেই সুয়ো-রাণীর দুয়োরাণীর গল্প শোনা! তারপর দুজনে দুজনকে জড়াইয়া ধরিয়া সেই একশয্যায় ঘুমাইয়া পড়া।

 সেদিন গিয়াছে।

 তারা দু জনে দুজনকে ভালবাসে, এর বেশী আর কিছু জানিত না।

২৭