এবং আর একজনের তপ্ত অশ্রু অলক্ষিতে তাহার আনত কণ্ঠকে সিক্ত করিয়া দিয়াছিল!
তারপর স্বপ্নের ছবি মিলাইয়া গেল। হায় রে, সে যে বোবার স্বপন! সে স্বপ্নকাহিনী অদ্যাবধি অন্য কেহ শুনে নাই—জানে নাই।
তারপর নয়বৎসর কাটিয়া গিয়াছে; সংসারের কর্ম্ম-প্রবাহে সরযূ-ফুল কোথায় ভাসিয়া গেল— তাহার ঠিক-ঠিকানা সে পাইল না।
সে আর বিবাহ করিল না। কেন করিল না, কেহ তার কারণ জানিত না। জিজ্ঞাসা করিলে, সে শুধু বলিত, “ইচ্ছা নাই।”
আজ দীর্ঘকাল পরে একান্ত আকস্মিকভাবে সেই বিস্মৃত স্বপ্ন আবার স্মৃতিপথে ফুটিয়া উঠিয়াছে। তাহার প্রাণের নিভৃত নিকেতন হইতে কে যেন আজ ব্যথিত স্বরে গায়িতেছে—
“সে পুরাণ দিনের কথা ভুলব কি রে হায়,
বাজিয়ে বাঁশী গান গেয়েছি বকুল তলায়,
মাঝে হলো ছাড়াছাড়ি গেলাম কে কোথায়,
আবার যদি দেখা হলো প্রাণের মাঝে আয়!”
আয়, আয়, আয়—প্রাণের মাঝে আয় রে আয়! কে আসিবে? কেন আসিবে?
ঘ
সন্ধ্যার সময়ে, সকলে বাহিরের ঘরে বসিয়াছিলেন। চাকর আসিয়া সকলের জন্য চা রাখিয়া গেল।