মধুপুরে আসিয়াছিলেন বিশ্রাম করিতে, কিন্তু কার্য্যগতিকে সেটা আর ঘটিয়া উঠিল না। এমনি প্রতিবারই হয়। লোকে ঠিক্ খোঁজ করিয়া আসিয়া তাঁহাকে ধরিয়া লইয়া যায়। বিশেষ, মধুপুরে রোগীরও অভাব নাই। সুতরাং বরেন্দ্রনাথের বিশ্রাম করা আর হয় না।
পরদিন একটু বেলায় সুখেন্দুর নিদ্রাভঙ্গ হইয়াছিল। সে বাহিরে আসিয়া দেখিল, বরেন্দ্রবাবু রোগী দেখিতে গিয়াছেন। চাকর আসিয়া তাহাকে চা ও খাবার দিয়া গেল—কিন্তু সরযূকে দেখা গেল না।
সুখেন্দু চাকরকে সরযূর কথা জিজ্ঞাসা করিতে যাইতেছিল, কিন্তু হঠাৎ কি ভাবিয়া থামিয়া গেল।
খানিক পরে বরেন্দ্রনাথ ফিরিলেন। সুখেন্দুকে একলা দেখিয়া তিনি একটু সঙ্কুচিত ভাবে বলিলেন, “মাপ কর্ব্বেন সুখেন্দুবাবু! আপনাকে এক্লা রেখে ভারি কষ্ট দিয়েচি! ওর অসুখ করেচে, নৈলে এমনটা হত না।”
খবরের কাগজ হইতে মুখ তুলিয়া সুখেন্দু কহিল, “অসুখ! কি অসুখ?”
বরেন্দ্রনাথ বলিলেন, “না, এমন কিছু নয়! ভারি মাথা ধরেচে, তাই বিছানা থেকে উঠতে পারচে না—বৈকালে একটু বেড়িয়ে এলেই সেরে যাবে অখন।”
সুখেন্দু বুঝিল অন্যরকম। আসল রোগটা যে মাথায় নয়, অন্য জায়গায় এ কথা সে মনে মনে অনেকটা আন্দাজ করিতে পারিল। আরও বুঝিল, সরযূ ইচ্ছা করিয়াই তাহার সুমুখে আসিতেছে না। পাছে আসিতে হয়, সেই ভয়েই সে অসুখের অছিলা করিয়াছে। এই কথা চিন্তা