পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

দেখে নাই। বালুকণাপূর্ণ ধূলায় ধূলায় তাহাদের চোখ-কাণ ভরিয়া গেল, হাওয়ার দাপটে তাহাদের নিঃশ্বাস বন্ধ হইয়া আসিল! মুক্ত প্রান্তরে ঝড়ের মুখে পড়িলে অবস্থা যে কিরূপ ভয়ানক হইয়া উঠে, তাহা যিনি জানেন না, তিনি বুঝিবেনও না। চারিদিকে কি অন্ধকার! আর সেই আঁধারের ভিতর হইতে রাশি রাশি কাঠকুটা আসিয়া তাহাদের গায়ে তীক্ষ্ণ সূচের মত বিধিতে লাগিল।

 সুখেন্দু চীৎকার করিয়া ডাকিল, “সরযু!”

 কিন্তু তাহার চীৎকার ঝড়ের চীৎকারে মিশিয়া গেল, সরযূ শুনিতে পাইল না।

 সুখেন্দু অন্ধের মত হাতড়াইয়া হাতড়াইয়া সরযূর একখানা হাত চাপিয়া ধরিল—বিদ্যুৎ-বিভায় কোনক্রমে পথ দেখিয়া দেখিয়া এবং কতবার পড়িতে পড়িতে বাঁচিয়া অনেক কষ্টে অগ্রসর হইয়া তাহারা একটি আশ্রয় পাইল। সেখানে একটি অতিক্ষুদ্র পাহাড় বা পাষাণীভূতা ভূমি ঝটিকার ভিতরে অটলভাবে দাঁড়াইয়া আছে। সুখেন্দু ও সরযূ তাহার নীচে গিয়া দাঁড়াইল। পাহাড়ের শীর্ষভাগটা সামনের দিকে বেঁকিয়া অনেকটা ঝুঁকিয়া পড়াতে, তাহাদের মাথার উপরে বেশ একট। আচ্ছাদানের মত হইল।

 তাহারই তলায় শ্রান্তভাবে বসিয়া বসিয়া তাহারা দুজনে হাঁফাইতে লাগিল।

 যে যায়গাটায় তাহারা আসিয়াছিল, সে যায়গাটাও অন্যস্থান হইতে অনেকটা উন্নত। সেইখান হইতে তাহারা নীরবে—বিস্মিত নেত্রে দেখিতে লাগিল, অবিরত বিদ্যুৎ-বিকাশে সুমুখের বিশাল প্রান্তর, বুকের

৪৬