পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্মৃতির শ্মশানে

করিয়া ডাকিল, “সুখেন্দুবাবু! সুখেন্দুবাবু! সুখেন্দুবাবু!”

 সুখেন্দু একলাফে দাঁড়াইয়া উঠিয়া বলিল, “সরযূ, প্রকৃতিস্থ হও! তোমার স্বামী আমাদের খোঁজে বেরিয়েচেন। চোখের জল মোছ, — তিনি যেন কিছু দেখতে না পান! আর—আর, তোমার কথার উত্তর কাল পাবে! জেন, আমি পাপিষ্ঠ নই।”

 বরেন্দ্রবাবু আবার ডাকিলেন। এবার সুখেন্দু বাহিরে আসিয়া সাড়া দিল।

 বরেন্দ্রনাথের রাত জাগিয়া পড়ার বাতিক ছিল। নহিলে তাঁহার ঘুম হইত না।

 ঝড়ের রাতে ফিরিয়া আসিয়া সরযূ বিছানায় গিয়া শুইয়া পড়িয়াছে, বরেন্দ্রনাথ প্রত্যহ যেমন বই পড়িয়া থাকেন, সেদিনও তেমনি টেবিলের ধারে বসিয়া অনেক রাত পর্যন্ত একখানা ইংরাজী নভেল পাঠ করিলেন। ঘড়িতে টং করিয়া একটা বাজিল, তিনিও বই মুড়িয়া উঠিয়া দাঁড়াইলেন।

 তিনি শয়ন করিবার আগেই সরযূ প্রতিদিন ঘুমাইয়া পড়িত। কিন্তু সেদিন খাটের কাছে আসিয়া তিনি দেখিলেন, সরযু তখনও ঘুমায় নাই— কড়িকাঠের দিকে চাহিয়া বিছানার উপরে আড়ষ্ট হইয়া পড়িয়া আছে।

 বরেন্দ্রনাথ সবিস্ময়ে কহিলেন, “একি’ আশ্চয্যি ব্যাপার—অ্যাঁ! বিছানা ছুঁতে না ছুঁতে যে মানুষ ঘুমিয়ে কাদা—তাঁর চোখে আজ ঘুম নেই, এও কি সম্ভব?”

 সরযূ ম্লানভাবে বরেন্দ্রনাথের দিকে চাহিল। তাহার মুখের ভাব

৫১