দেখিয়া বরেন্দ্রনাথ চমকিয়া উঠিলেন। “তোমার মাথার অসুখটা বুঝি বেড়েচে? তাড়াতাড়ি জিজ্ঞাসা করিলেন, ওষুধ দেব?”
“না!”
সরযূর কণ্ঠস্বর শুনিয়া বরেন্দ্রনাথের উদ্বেগ বাড়িল বৈ কমিল না। বলিলেন, “তোমার গলা এমন ধরা-ধরা কেন? জলে ভিজে ঠাণ্ডা লেগেচে বুঝি? কি মুস্কিল! জ্বর-টর্ হয়নি ত? দেখি, হাত দেখি!”
সরযূ বলিল, “আমার কিচ্ছু হয়নি।”
কিন্তু বরেন্দ্রনাথ সে কথা শুনিলেন না, একান্ত অবিশ্বাসের সহিত ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন, “ওকথা বাজে কথা—একটা কিছু হয়েচে!”
সরযূ সহসা উঠিয়া বসিয়া তাঁহার বুকে ঝাঁপাইয়া পড়িল এবং দুইহাত দিয়া তাঁহার গলা জড়াইয়া ধরিল।
সরযূর ব্যবহারে বরেন্দ্রনাথ আজ বিব্রত হইয়া পড়িলেন। সে ত’ এমনধারা কখন করে না! তিনি সরযূর মাথায় সপ্রেমে হাত বুলাইয়া দিতে দিতে বলিলেন, “সরযূ, তোমার কি হয়েচে আমাকে বলবে না?”
সরযূ কোন উত্তর দিল না। হঠাৎ বরেন্দ্রনাথের মনে হইল, তাঁহার বুকের ভিতরে মুখ লুকাইয়া সরযূ ফোঁপাইয়া ফোঁপাইয়া কাঁদিতেছে। তাড়াতাড়ি তিনি দুইহাতে তাহার মুখখানি তুলিয়া ধরিলেন! সত্যই ত’! সরযূর চোখে জল!
বরেন্দ্রনাথ একেবারে স্তম্ভিত হইয়া গেলেন। দুইহাতে তেমনি করিয়া সরযূর মুখখানি ধরিয়া থাকিয়া তিনি আড়ষ্টভাবে দাঁড়াইয়া রহিলেন। সরযূকে তিনি অত্যন্ত ভালবাসিতেন। বিবাহ হইয়া অবধি