পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্মৃতির শ্মশানে

তাহার চোখে তিনি কখনও জল দেখেন নাই। আজ এই প্রথম সরযূকে কাঁদিতে দেখিয়া তাঁহারও মুখ কাঁদ-কাঁদ হইয়া আসিল!

 অনেক কষ্টে আত্মসংবরণ করিয়া তিনি বলিলেন, “তোমাকে কি কেউ কিছু বলেচে?”

 “না।”

 “তবে?”

 “বল্‌ব?”

 “বল—বল! তোমার এমন কি হয়েচে যে, তুমি একেবারে কেঁদে ফেল্লে?”

 “বল্‌চি। বল্‌ব বলেই এতক্ষণ জেগে আছি। তোমাকে সব না খুলে বল্‌তে পার্‌লে প্রাণে আমার শান্তি হবে না। কিন্তু বলি-বলি করে আর বল্‌তে পার্‌চি না, বড় ভয় কর্‌চে!”

 “ভয়? আমাকে ভয়? বলকি সরযূ?”

 “হ্যাঁ। পাছে শুনে তুমি আমাকে কি মনে কর, আমাকে পায়ে ঠেল।”

 বরেন্দ্রনাথ অতি করুণভাবে মাথা নাড়িতে লাগিলেন। তাঁহাকে দেখিয়া যে সরযূর ভয় হইতে পারে, এ কথাটা তিনি যতই ভাবেন, ততই আশ্চর্য্য হইয়া যাইতে লাগিলেন।

 সরযূ ভয়ে-ভয়ে স্বামীর একখানা হাত ধরিয়া বলিল, “বল, আমাকে বক্‌বে না?”

 “ও সব বকা-টকা আমার কুষ্টিতে লেখে না। যা বল্‌তে চাও বল, না বল্‌তে চাও বোলো না। ব্যাস্—ফুরিয়া গেল। এর ভেতরে আবার কিন্তু কি?”—বলিয়া, বরেন্দ্রনাথ অর্দ্ধস্বগতভাবে আবার অস্ফুট

৫৩