পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কপোতী

 যেখানে মেঘ-মেদুর আকাশের কোলে শ্যামলঘন বনভূমির উপরে বিজলীর হীরক-হার দুলিতেছিল, সেইদিকে নিরাশনেত্রে চাহিয়া কপোতী স্তব্ধভাবে বসিয়াছিল।

 আজ তিনদিন হইল কপোত বাহির হইয়া গিয়াছে, আর ফিরে নাই।

 মাঝে মাঝে কপোতী বাহির হইয়া আসিতেছে, একবার এদিকে, একবার ওদিকে উড়িয়া যাইতেছে, কিন্তু কপোতের দেখা নাই। আকাশে আগুন ধরাইয়া হঠাৎ বাজ্‌ ডাকিয়া ওঠে, আর ভয়ে কাঁপিতে কাঁপিতে কপোতী বাসায় ফিরিয়া আসে। এমনিভাবে তিনদিন কাটিয়াছে।

 আমি কপোতীকে কতবার ডাকিয়াছি, কতবার থাবার ছড়াইয়া দিয়াছি,—কিন্তু সে আমার কথা কাণে তোলে নাই, খাবারের দিকে ফিরিয়াও চাহে নাই। হয়ত ক্ষুধায় তাহার দেহ জ্বরজ্বর,—কিন্তু শোকে সে ক্ষুধা-তৃষ্ণা ভুলিয়াছে।

* * * *

 গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। তখন মাঝে মাঝে দম্‌কা হাওয়া বাহির হইতে দরজা-জানালায় ধাক্কা মারিতেছিল। এবং ঝুপঝাপ করিয়া অঝোরে বৃষ্টি ঝরিতেছিল।

 চাহিয়া দেখি, আমার স্ত্রীও উঠিয়া বসিয়াছে। সে যেন বসিয়া বসিয়া

৬১