পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কপোতী

 ভোরবেলায় উঠিয়া কপোতীকে দেখিতে পাইলাম না। ভাবিলাম, সে কপোতের খোঁজে গিয়াছে। সারাদিন গেল, সাঁঝের আঁধার নামিয়া আসিল,—কিন্তু কপোতী আসিল না। স্ত্রী বলিল, “ওগো, তুমি একখানা মৈ নিয়ে এসে বাসার ভিতরে কিছু থাবার আর জল রেখে দাও না! হয়ত এখনি এসে ধুঁকে পড়্‌বে — আহা, আজ ক’দিন কিছু মুখে দেয়নি, হাজার হোক্ ‘কেষ্টের জীব’ ত!”

 মৈ বহিয়া উপরে উঠিলাম। বাসার কাছে মুখ নিয়া যাইবামাত্র দেখিলাম, কপোতী কোথাও যায় নাই—বাসার ভিতরেই খড়্‌কুটার উপরে দু’ডানা বিছাইয়া, বুকে মুখ গুঁজিয়া নিসাড় হইয়া পড়িয়া আছে। ডাকিলাম,—সে নড়িল না। তার গায়ে হাত দিলাম—মাথাটি একদিকে লুটাইয়া পড়িল। সে মরিয়া গিয়াছে।

 পাখীর শোকে আর কারুর চোখে জল আসে কি না জানি না, আমি কিন্তু না কাঁদিয়া থাকিতে পারিলাম না।

৬৩