যে ছাত্রটি কথা কহিতেছিল, সে বলিল, “সুধু তাই নয়, রণেন্দ্র আপনাকেও সুনজরে দ্যাখে না।”
যোগেশবাবু অবহেলাভরে বলিলেন, “ক্যান,—অপরাধ?”
“সে বলে আপনি আদর্শের জন্যে ছবি আঁকেন না।”
“তবে কিসের জন্যে আঁকি, শুনি!”
“পয়সার জন্যে!”
যোগেশবাবু একচোখ মুদিয়া কহিলেন, “নন্সেন্স!” তারপর অত্যন্ত চটিয়া কাণের পাশে এলমেল চুলগুলা সরাইয়া দিয়া অনেকক্ষণ গুম্ হইয়া বসিয়া রহিলেন। চিত্রকর র্যাফেলের লম্বা চুল ছিল বলিয়া তিনিও মাথায় বড় বড় চুল রাখিয়াছিলেন। সেই দীর্ঘকেশ তাঁহার মুখে আদোপেই মানাইত না;—কারণ, বাল্যকালে একবার বসন্তরোগে আক্রান্ত হইয়া তিনি প্রাণে বাঁচিয়াছিলেন বটে, কিন্তু তাঁহার মুখের রূপ একেবারে অপরূপ হইয়া গিয়াছিল। একে ত’ রংটি তাঁর ‘ব্লুব্যাক্’-নিন্দিত, তাহার উপরে মুখময় বসন্তের দাগ থাকাতে মনে হইত, কে-যেন তাঁহার মুখে বন্দুকের একরাশ ছর্রা ছুঁড়িয়া মারিয়াছে!
ঘরের ভিতরে যে ছাত্রগুলি ছিল, তাহারা ক্রুদ্ধ যোগেশবাবুর ঘন ঘন চোখ বোঁজা দেখিয়া পরমকৌতুকভরে তাঁহার অগোচরে মুখ টিপিয়া টিপিয়া হাসিতে লাগিল।
হঠাৎ সে হাসি যোগেশবাবুর চোখে পড়িয়া গেল। ক্ষাপ্পা হইয়া তিনি বলিয়া উঠিলেন, “তোমরা হাস্চ বড় যে? মজা পেয়েচ—না?”
একজন কৃত্রিম বিনয়ের সহিত তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিল, “আজ্ঞে