না—সেকি কথা, সেকি কথা! আপনি চটে গেলে আমরা কি হাস্তে পারি? তাও কি সম্ভব?”
“হু, হু—বুঝেচি বুঝেচি! আর চালাকি কর্তে হবে না—ঢের হয়েচে, থাম! তোমরা কি তবে বল্তে চাও হে বাপু, এতক্ষণ তোমরা দন্তবিকাশ করে কাঁদ্ছিলে? আমি ন্যাঁকা—না?” বলিয়াই যোগেশবাবু একচোখ মুদিলেন ৷
ছাত্রটি কোনরকমে প্রবল হাস্যবেগ দমন করিয়া বলিল, “আজ্ঞে না—কাঁদ্ব ক্যান—হাস্ছিলুম। রণেন্দ্রছোঁড়ার পাগ্লামীর কথা মনে করে হাস্ছিলুম। ঐযে—মাষ্টার মশাইএর সঙ্গে রণেন্দ্র আস্চে।”
মনোমোহনবাবুর সহিত রণেন্দ্র ঘরের ভিতর আসিয়া ঢুকিল।
যোগেশবাবু একবার বক্র কটাক্ষে রণেন্দ্রের দিকে চাহিয়া মনোমোহনবাবুকে বলিলেন, “শুন্চেন মশাই, রণেন্দ্র আমাকে কি বলে?”
মনোমোহনবাবু জানিতেন, এই দুটি লোকের ভিতরে বরাবর একটা না-একটা গোলমাল লাগিয়াই থাকে। লৌহ ও প্রস্তরবিশেষের মত এরা একসঙ্গে মিলিলেই অগ্ন্যুৎপাত অনিবার্য্য। তিনি বুঝিলেন, আজ আবার একটা নূতন-কিছু ঘটিয়াছে। মৃদু-মৃদু হাসিয়া বলিলেন, “রণেন্দ্র কি বলে যোগেশবাবু?”
“রণেন্দ্র বলে আমি পয়সার জন্যে ছবি আঁকি, আমার কোন আদর্শ নেই!”
মনোমোহনবাবু বলিলেন, “হ্যা রণেন্দ্র?”
রণেন্দ্র এতক্ষণ চুপ করিয়া দাঁড়াইয়া ছিল। এখন একটু আগাইয়া আসিয়া বলিল, “হ্যাঁ বলেচি—আমার ঐ মত।”