যোগেশবাবু মুখ খিচাইয়া হাত নাড়িয়া বলিলেন, “ভারি মত দেনেওয়ালা যে! মরে যাই আর কি! সেদিনকার ছেলে তুমি— এরি মধ্যে মুখে এত লম্বা লম্বা কথা—অ্যাঁ?”
মনোমোহনবাবু বলিলেন, “যেতে দিন যোগেশবাবু, যেতে দিন! রণেন্দ্র ছেলেমানুষ—আর কথাটাও অতি তুচ্ছ, এ নিয়ে আর বকাবকি করে কাজ নেই!”
যোগেশবাবু একটুও শান্ত না হইয়া বলিলেন, “ছেলেমানুষ! রণেন্দ্র ছেলেমানুষ! মুখে যার অত বড় গোঁফ—সে যদি ছেলেমানুষ হয়, বুড়ো বলে কাকে মনোমোহনবাবু?”
একটি ছাত্র বলিল, “আজ্ঞে, একটু আগে আপনি নিজেইত’ ওকে ছেলেমানুষ বল্লেন!”
যোগেশবাবু চটিয়া লাল হইয়া কহিলেন, “কখন বল্লুম?”
“এই—একটু আগে!”
“ভুল—ভুল শুনেচ! অতবড় যার গোঁফ, আমি তাকে ছেলেমানুষ বল্ব? অসম্ভব! তোমরা কি বল্তে চাও হে বাপু, আমি চোখের মাথা একেবারে খেয়েচি?”
ছাত্রেরা সমস্বরে বলিয়া উঠিল, “আজ্ঞে না, আমরা এ কথা কখনই বল্তে চাই না।”
মনোমোহনবাবু কোনরকমে হাসি চাপিয়া বলিলেন, “চুপ—চুপ! গোলমাল করো না।”
যোগেশবাবু বলিলেন, “হ্যাঁহে রণেন্দ্র, তোমার মতে তুমিই নাকি বাঙ্গলার সব্-সে-সেরা চিত্রকর?”