পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যশের মূল্য

শক্তিতে রণেন্দ্রের যেমন বিশ্বাস, তেমন বড় একটা দেখা যায় না। আমি নিশ্চয় বলতে পারি ও একদিন মস্ত নাম কর্‌বে।”

 রণেন্দ্র আস্তে আস্তে ঘরের ভিতর হইতে বাহির হইয়া গেল।

 একজন ছাত্র বলিল, “কিন্তু মাষ্টার মশাই, রণেন্দ্রের বেশ একটু পাগ্‌লামির ছিট্ আছে।”

 মনোমোহনবাবু বলিলেন, “হ্যাঁ—তা আমি জানি। ভাব-প্রবণতা বেশী হলেই লোককে পাগল বলে মনে হয়। ছবিকে ভাল করে ফোটাবার জন্যে ওর কেমন একটা অস্বাভাবিক চেষ্টা আছে। রণেন্দ্র একবার কি করেছিল জান? একদিন দেখি, রণেন্দ্রের বাঁ-হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঝর্-ঝর্ করে রক্ত পড়্‌চে, আর সে নিশ্চিন্ত-ভাবে বসে-বসে ছবি আঁক্‌চে। দেখে আমি ত’ একেবারে অবাক্! জিজ্ঞাসা করাতে বল্লে, আঙ্গুল কেটে রক্তের আসল রংটা কি-রকম, তাই সে দেখ্‌চে! অদ্ভুত লোক! তোমরা এটাকে পাগ্‌লামি বল্‌তে পার,—কিন্তু এই পাগ্‌লামির জন্যেই একদিন ও অমর হবে।”

 যোগেশবাবু একচোখ মুদিয়া ভাবিতে লাগিলেন, “যেমন মাষ্টার, তেমনি ছাত্র—দুটিই একেবারে বদ্ধপাগল।”

 রণেন্দ্র ভাবিতে ভাবিতে বাড়ীর দিকে চলিল। রাস্তায় লোকজন, গাড়ীঘোড়া কত কি চলিতেছে, কিন্তু সেদিকে তার আদোপেই নজর ছিল না—কি যে তার ভাবনা, তা সুধু সেই-ই জানে।

 ভাল চিত্রকর বলিয়া অল্পদিনেই সে বেশ নাম করিয়াছিল। এত শীঘ্র

৬৯