পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যশের মূল্য

 বাহির হইতে দরজায় ঘা মারিয়া পাচক ডাকিল, “বাবু!”

 অত্যন্ত চমকিয়া রণেন্দ্র জিজ্ঞাসা করিল, “কে?”

 “বাবু, খাবার হয়েচে, খাবেন আসুন।”

 ক্রুদ্ধ রণেন্দ্র কর্কশস্বরে কহিল, “আমাকে বিরক্ত করিস্‌নে’—যা, আমি এখন খাবনা!”

 তাহার পর রণেন্দ্র আবার চিত্তা-সাগরে আপনাকে ডুবাইয়া দিল।

 পৃথিবীতে যাহারা যশের মদিরা পান করিয়াছে, হায়, তাহাদের শান্তি কোথায়?

 এক সপ্তাহ কাটিয়া গিয়াছে।

 এই সপ্তাহকাল রণেন্দ্র বাড়ীর বাহিরে পা বাড়ায় নাই—ঘরে বসিয়া ক্রমাগত ভাবিয়াছে, কোন্ মন্ত্রে সাধনার দেবী সাকার হইয়া উঠিবেন?

 অন্য সময় হইলে তাহার বিষয়-নির্ব্বাচন করিতে এতটা দেরী হইত না—কিন্তু এবারে সে কিছুতেই আপনার উপযোগী আদর্শ খুঁজিয়া পাইতেছিল না। অথচ যতই দিন যাইতেছে, ততই সে নিরাশ হইয়া পড়িতেছে। এমন কি, এক-একদিন গভীর শূন্যতায় সে ক্ষ্যাপার মত দুইহাতে মাথার চুল ছিঁড়িয়াছে, উচ্চস্বরে আপনাকে আপনি গালাগালি দিয়াছে, ঘরের মেঝের উপরে উপুড় হইয়া পড়িয়া বালকের মত কাঁদিয়াছে!

 সেদিন সকালে রণেন্দ্র চুপ করিয়া বসিয়াছিল, এমন সময়ে মনোমোহন

৭৫