বাবুর দরওয়ান আসিয়া তাহার হাতে একখানা চিঠি দিয়া গেল। চিঠি খুলিয়া সে দেখিল, তাহার শিক্ষক মহাশয়ের হস্তাক্ষর। রণেন্দ্র পড়িল:—
“স্নেহাস্পদেষু,
প্রদর্শনীর আর বেশী দেরী নাই। আর এক সপ্তাহের ভিতরে ছবি না পাঠাইলে চলিবে না। তুমি কি করিতেছ? তোমার ছবির কতদূর?
যোগেশবাবু ইতিমধ্যেই ছবি পাঠাইয়া দিয়াছেন। তাঁহার ছবি আমি দেখিয়াছি। বেশ হইয়াছে।
কিন্তু তোমার কাছ হইতে আমি আরও ভাল কাজের আশা করি। তোমার মত প্রিয় ছাত্র আমার কেহ নাই। আশীর্ব্বাদ করি, তুমি গুরুর মুখ রাখিতে পারিবে।
মনে রাখিও, এই প্রদর্শনীতে যদি তোমার চিত্র সর্ব্বোৎকৃষ্ট হয়, তবে তোমার যশের পথে আর কোন বাধা থাকিবে না।
তোমার শিক্ষা সফল হউক। ইতি।”
চিঠি পড়িয়া রণেন্দ্র আরও ভাঙ্গিয়া পড়িল। আর এক সপ্তাহমাত্র সময়? এখনও যে তাহার চিত্রের পরিকল্পনা স্থির হয় নাই! তাইত, কি করিবে সে?
আত্মশক্তির উপরে এতদিন তাহার যে দৃঢ়বিশ্বাস ছিল, এখন সে বিশ্বাসের মূলও যেন আল্গা হইয়া গেল! এই তুচ্ছ শক্তি নিয়া দশের মাঝে সে জাঁক করিয়া বেড়াইয়াছে! ছেলেখেলায় দিন কাটাইয়া সে ভাবিয়াছে, অমর হইবে! হায়রে কপাল! আপনার অক্ষমতার জন্য রণেন্দ্রের দুচোখ জলে ভরিয়া উঠিল।