পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

সে পড়িয়া যাইতেছিল, তাড়াতাড়ি কোনরকমে দেয়াল ধরিয়া দাঁড়াইল।

* * * *

 বাহির হইতে দরজা ঠেলিয়া ও ক্রমাগত চেঁচাইয়াও যখন দরজা খুলিল না, বামুন ও চাকর তখন ভীত হইয়া উঠিল। তাহারা ঠিকা লোক,—রোজ সন্ধ্যায় কাজ সারিয়া চলিয়া যায় আর সকালে কাজে আসে। প্রত্যহ দরজা ঠেলিলেই হয় রণেন্দ্র, নয় লীলা আসিয়া দ্বার খুলিয়া দিত—আর, আজ এত বেলা, এত ডাকাডাকি-ঠেলাঠেলি, তবু কপাট খুলিল না কেন? এদিকে মাঝে মাঝে তারা লীলার গুম্‌রাণো কান্নার শব্দও শুনিতে পাইতেছিল!

 কিছুই বুঝিতে না পারিয়া, তারা পাড়ার পাঁচজনকে ডাকিল। অবশেষে, সকলে মিলিয়া অনেক পরামর্শের পর দরজা ভাঙ্গিয়া ফেলিল!

 সকলে একটু সঙ্কুচিতভাবে বাড়ীর ভিতরে ঢুকিল। সিঁড়ি বহিয়া উপরে উঠিয়া, অন্দরের দিকে অগ্রসর হইয়া তাহারা দেখিল, দেয়ালে ঠেশ্‌ দিয়া, দুইহাতে দুইহাঁটু জড়াইয়া ধরিয়া, রণেন্দ্র, হেঁটমুখে স্তব্ধ হইয়া বসিয়া আছে ৷

 তাহাদের পদশব্দে চমকিয়া রণেন্দ্র মুখ তুলিল। তাহার চক্ষু রক্তবর্ণ—লক্ষ্যশূন্য! খানিকক্ষণ পরে হঠাৎ সে হা হা করিয়া হাসিয়া উঠিয়া, সাম্‌নের চিত্রপটের দিকে অঙ্গুলিনির্দ্দেশ করিয়া বলিল, “ডাক্তার! ডাক্তার! আমি অমর হয়েছি!”

৮২