পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবন-যুদ্ধে

ছিলেন। অতএব, তাঁহার মৃত্যুতে পাওনাদার-মহলে একটা বিষম হৈ-চৈ পড়িয়া গেল।

 কিন্তু, উপায় নাই। তাগাদার জন্য, সাইলকেরা ঋণীর পিছনে উলুবেড়ে হইতে ‘হনোলুলু’তে গিয়াও হাজির হইতে পারে; কিন্তু তাহাদিগকে স্তব্ধ এবং জব্দ করিবার প্রধান উপায় হইতেছে, স্বর্গগমন। কুবেরের পিতা, এই চরম এবং পরম উপায় অবলম্বন করিয়া, পাওনাদারদের হাত হইতে নিষ্কৃতিলাভ করিলেন।

 কিন্তু তাহারাও ‘নাছোড়্‌-বান্দা’। অগত্যা, পিতার ‘ধার্ করিয়া ঘৃতপানের’ ফলে, পুত্র কুবেরচন্দ্রকে একমাত্র বসতবাড়ীখানি বিক্রয় করিয়া ফেলিতে হইল।

 যুবতী স্ত্রী, দুটি সন্তান আর নেংটি ইঁদুর, আর্সুলা ও উইপোকা-ভরা তোরঙ্গসমেত কুবেরচন্দ্র ‘ভাড়াটে বাড়ী’তে গিয়া উঠিল। কিন্তু নিজের বাড়ীতে বাস করিয়া-করিয়া কুবেরের অভ্যাস এমনি খারাপ হইয়। গিয়াছিল যে, বাসাবাড়ীতে মাসের শেষে ভাড়া দিতে হয়, এ কথা তার মোটেই মনে থাকিত না।

 কিন্তু বাড়ীওয়ালা সে কথা মনে করাইয়া দেওয়া দরকার বিবেচনা করিত। ফলে, কুবেরচন্দ্র অন্দরে আসিয়া, স্ত্রীকে ডাকিয়া বলিত, “ওগো, শুন্‌চো্?” সরলার দুইস্তনে, তখন হয়ত দুটি শিশু নীরা দোদুল্যমান, এবং তাহার বাট্‌নার হলুদমাথা হাতে ভাতের ‘কাটি’! সে উত্তর দিত,

 “হুঁ!”

 “বাড়ীওলা, ভাড়া চাইচে যে!”

 “তা আমি কি কর্ব্ব?”

৮৫