ছেলে-মেয়েকে সান্ত্বনা দিতে দিতে কুবের বাড়ীর ভিতরে ঢুকিল। সরলা আসিয়া অবজ্ঞাভরে কহিল, “কাজের কি হল?” হতাশভাবে রোয়াকের উপরে বসিয়া পড়িয়া কুবের কহিল, “হল আর কি! রোজ যা হয়ে আস্চে, তাই।”
সরলা মুখ বাঁকাইয়া বলিল, “বেশ!”
তারপর, বালতিটা সশব্দে তুলিয়া নিয়া দুম্ করিয়া কলতলায় ফেলিয়া, কল খুলিয়া দিয়া বলিল, “শুনতে পাচ্চ, গয়লা আজ দুধবন্ধ করেছে, বলে গেছে, নালিশ করে দাম আদায় কর্ব্বে, তবে ছাড়বে।”
কুবের কোন জবাব দিল না, নীরবে স্ত্রীর মুখের দিকে শূন্যদৃষ্টিতে চাহিয়া বসিয়া রহিল।
“বাড়ীওলা এসেছিল। বলে গেল, জোচ্চর্ বাপের জোচ্চর বেটা, তিনদিনের মধ্যে বাড়ীখালি কর্ত্তে হুকুম দিয়ে গেছে। বল্লে, সে ভাড়া চায় না, আমরা এখান থেকে বিদেয় হলে বাঁচে।”
কুবের, আস্তে আস্তে উঠিয়া অধোবদনে সেখান হইতে চলিয়া গেল।
খ
খোলার বাড়ী। মেটে দেওয়াল। চালের ভিতর দিয়া সূর্য্যের আলো আসিয়া ঘরের ভিতরে পড়িয়াছে।
একদিকে একটি কাঠের তোরঙ্গ। তার উপরে কতকগুলা ভাঙ্গাচোরা আসবাব। তারই একটিপাশে বসিয়া কুবেরচন্দ্র আকাশপাতাল ভাবিতেছে।
মেঝের উপরে একখানা ‘শতচ্ছিন্ন’ মাদুর পাতা, তাহার উপরে শুইয়া