পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
পাখীর কথা

পীতাভ পক্ষিমিথুন বাছিয়া লইতে হইবে। ইহার কারণ এই যে যখন পীতের সহিত নীলের সমাবেশে সবুজের উৎপত্তি, তখন সহজেই অনুমান করা যায় যে সবুজ হইতে পীতকে বাদ দিতে পারিলেই নীলবর্ণকে জাগাইয়া তুলিতে পারা যাইবে। অতএব গোড়াতেই যদি এমন এক জোড়া পাখী বাছা যায়, যাহাদের গায়ের রংএ হরিদ্বর্ণের প্রাধান্য এবং হরিদ্রাবণের ঈষৎ আভাসমাত্র বিদ্যমান তাহা হইলে নীলবর্ণের শাবক পাইবার সম্ভাবনা সহজ হয়;—উক্ত মিথুনের সন্তানসন্ততি একেবারেই নীলবর্ণ না হইতে পারে, কিন্তু পুনরায় উক্ত শাবকগুলির মধ্য হইতে পূর্ব্ববর্ণিত উপায়ে নির্ব্বাচিত নবীন পক্ষিমিথুন লইয়া যথা সময়ে যৌনসম্মিলনে বাঞ্ছিত ফল নিশ্চয়ই পাওয়া যায়।

 উপরে যে রং ফলান বা রংবদ্‌লান ব্যাপার বর্ণিত হইল তাহা পাঠ করিলে বুঝিতে পারা যাইবে যে, একই জাতীয় সম-শ্রেণীর মধ্য হইতে সাবধানে নির্ব্বাচিত বিহঙ্গমিথুনের মিশ্রণে যে বর্ণবিপর্য্যয় পাওয়া গেল তাহার সহিত বর্ণসঙ্কর-সমস্যার বিশেষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক না থাকিলেও ইহার দ্বারা সপ্রমাণিত করা যায় যে বিভিন্ন-জাতীয় অথবা একই জাতির অন্তর্গত বিভিন্ন শ্রেণীর স্ত্রীপুং পক্ষীর সম্মিলনজাত বর্ণসঙ্করের আকার, প্রকার ও বর্ণ নূতনতর ও অধিকতর বৈচিত্র্যময় হইবে। পাশ্চাত্য পণ্ডিতের হাতে কেনেরি (Canary) পাখীর যে নব নব রূপান্তর সম্ভাবিত হইয়াছে তাহাও এইরূপ জাতি ও শ্রেণীগত আকার ও বর্ণের সাম্য ও বৈষম্যের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া সুনিপুণ পক্ষিপালকের নির্ব্বাচনের ফল।

 অসীম ধৈর্য্য ও বৈজ্ঞানিক পর্য্যবেক্ষণের ফলে পক্ষিপালক যে অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছেন তাহাতে তিনি অনেক সময়ে যদি দৃঢ়স্বরে কোনও থিওরি (theory) প্রচার করিতে চেষ্টা করেন তাহা পণ্ডিত সমাজে অবজ্ঞার বিষয় হইতে পারে না। ভুলভ্রান্তি, ত্রুটিবিচ্যুতি হয় ’ত ভবিষ্যতে ধরা পড়িতে পারে; কিন্তু যত দিন না বৈজ্ঞানিক