পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
পাখীর কথা

হইয়া উঠে। পাশ্চত্য সমাজ অনেক স্থলে ঠেকিয়া শিখিয়াছে যে, পতত্রের লোভে অথবা খেলার ছলে অথবা আহার্য্যে পরিণত করিবার জন্য পাখীর প্রাণসংহার করিয়া মানুষকে economic হিসাবে এত ঠকিতে হইয়াছে যে, রাষ্ট্রীয় বিধিব্যবস্থা ব্যতীত তাহা সাম্‌লাইবার উপায় থাকে না। নিউ সাউথ্ ওয়েল্‌স্এর ভূতপূর্ব্ব প্রধান সচিব স্যর যোসেফ্ ক্যারুথস্ পাখীর উপকারিতা সম্বন্ধে অষ্ট্রেলিয়ার একখানি পত্রিকায়[১] (১৯১৭ খৃঃ অব্দের অক্টোবর মাসে) মার্কিণ দেশের অভিজ্ঞতার বিষয় এইরূপে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন,—মার্কিণের যুক্ত রাষ্ট্রে সরকারি বিশেষজ্ঞেরা হিসাব করিয়া দেখিয়াছেন যে, কীট এবং মূষিকের উৎপাতে বৎসরে তিন শত কোটি টাকার লোকসান হয়; সেই সকল কীট ও মূষিক কিন্তু পাখীর কাছে সাধারণতঃ জব্দ থাকে। কোনও কারণে একবার মার্কিণের ইণ্ডিয়ানা ও ওহাইয়ো প্রদেশে কীটবৈরী কয়েকটি পাখীর উচ্ছেদসাধন করা হয়; সেই বৎসরেই প্রায় ষাট লক্ষ বিঘা জমির সমস্ত গম কীটেরা নষ্ট করিয়া ফেলে। অবশ্যই ইহার ফল দাঁড়াইল এই যে, লক্ষ লক্ষ মণ গম নষ্ট হইল এবং সঙ্গে সঙ্গে আটা ময়দারও দাম চড়িয়া গেল। পেন্‌সিল্ভ্যানিয়া (Pennsylvania) প্রদেশে আইনের দ্বারা পেচক ও শ্যেনের প্রাণসংহারের ব্যবস্থা করা হইল। কয়েক বৎসরের মধ্যে প্রায় দুই লক্ষ প্যাঁচা ও বাজ মারা হইল; এ দিকে ইঁদুরের সংখ্যা এত বাড়িয়া গেল যে, বহু লক্ষ টাকার শস্য তাহারা নষ্ট করিয়া ফেলিল। তখন নূতন আইন করিয়া ঐ সকল পাখী মারা বন্ধ করিতে হইল। পানামা খালের কাছে এত বিষাক্ত কীট আছে যে, প্রেসিডেণ্ট উইল্‌সন্ হুকুম জারি করিয়াছেন, সেখানে কোনও বন্য বিহঙ্গের প্রাণসংহার করা যেন না হয়। লর্ড কিচ্‌নার যখন মিশরদেশ শাসন করিতেছিলেন, তখন খেদিভ্‌কে দিয়া একটা

  1. Sydney Daily Telegraph, 12th October, 1917.