পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগ
১০৭

 কিন্তু ইহাকে টলাইবার চেষ্টা সুরু হইয়াছে। পুরাতন সংস্কারের ভিত্তি পাকা নহে, এই কথাই নব্যতন্ত্রের পর্য্যবেক্ষকসম্প্রদায় জোর করিয়া ঘোষণা করিতেছেন। এমন ভাবে করিতেছেন যে, তাঁহারা যেন বলিতে চাহেন যে, প্রাচীন মতাবলম্বী কুসংস্কারাপন্ন aviculturist তাঁহাদের করুণার পাত্র; অনেক খরচ পত্র করিয়াও তাঁহারা এতদিন বিহঙ্গ-তত্ত্ব-জিজ্ঞাসায় অধিক দূর অগ্রসর হইতে পারেন নাই; তাঁহাদের অবলম্বিত উপায় তাঁহাদিগকে অধিক দূর লইয়া যাইতে পারে না। তাঁহারা নিজেদের কিংবা পালিত পাখীদের ইষ্টসাধন করিতে কতদূর সমর্থ হইয়াছেন, তাহা বিচার করিতে বসিলে তাঁহাদের বিচক্ষণতার বেশী প্রশংসা করা যায় কি না সন্দেহ। তাঁহারা কি অস্বীকার করিতে পারেন যে, অনুকূল পরিবেষ্টনীর মধ্যেও তাঁহাদের সাধের খাঁচার পাখী অপেক্ষাকৃত অল্পায়ু হইয়া যায়? রুগ্ন হইয়া পড়ে? বিবর্ণ অথবা হীনবর্ণ হইবার সম্ভাবনা তাহাদের থাকে? তবে কেন আমরা সেই পাখীকে উড়াইয়া দিয়া কাননে-কান্তারে তাহার অনুসরণ করিয়া, আসল পাখীটির স্বরূপ পরিচয় পাইবার চেষ্টা করি না? তবে অবশ্যই স্বীকার করিতেই হবে যে, বনে জঙ্গলে স্বাধীন পাখীর গতিবিধি, উড়িবার ভঙ্গী ও নীড়রচনার পদ্ধতি ভাল করিয়া নিরীক্ষণ করিবার ব্যবস্থা না করিলে, কেবল পাখীটিকে জঙ্গল হইতে ধরাইয়া আনিয়া মানবাবাসে নানা উপায়ে পোষ মানাইবার চেষ্টা করিয়া, তাহার গতিবিধি ও উড়িবার ভঙ্গী পর্য্যবেক্ষণ করিবার চেষ্টা করায়, বৈজ্ঞানিক হিসাবে সুফল লাভের প্রত্যাশা থাকিতে পারে না। নীড়রচনার কথা’ত আমাদের পক্ষিগৃহমধ্যে তত্ত্বজিজ্ঞাসুর পক্ষে না তুলিলেই ভাল; কারণ, মানবরচিত নীড়গুলি যে সকল রকমে কৃত্রিম দাঁড়াইয়া যায়—ইহা মানিয়া লইতেই হইবে। যথাসম্ভব হিসাব করিয়া আমরা যে বাসাটি পাখীর উপযোগী বিবেচনা করিয়া সযত্নে নির্ম্মাণ করিলাম (এবং তাহা না করিলে নয়) তাহা