পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
পাখীর কথা

যে ঠিক বনে-জঙ্গলে গাছের পাতার অন্তরালে অথবা ঝোপের মধ্যে, তরুকোটরে, গুহাভ্যন্তরে অথবা গৃহবলভিতে বিভিন্ন শ্রেণীস্থ পক্ষীর স্বরচিত কুলায়ের অনুরূপ সর্ব্বতোভাবে হয়, এরূপ মনে করা চলে না। তবে যে আমাদের রচিত বাসাগুলির ভিতর পাখীয়া অল্প সময়ের মধ্যে জীবন যাপন করিতে অভ্যস্ত হইয়া যায়, এই adaptability অর্থাৎ পারিপার্শ্বিক অনুকূল অবস্থার সহিত অনায়াসে অথবা অল্প আয়াসে মিলাইয়া চলিবার ক্ষমতা না থাকিলে তাহারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হইত। কিন্তু তাই বলিয়া বিহঙ্গতত্ত্বজিজ্ঞাসু, এই প্রকার পক্ষিপালন-প্রথার ভিতর দিয়া বিহঙ্গতত্ত্বের অনুশীলন করা যে একমাত্র প্রকৃষ্ট উপায়—তাহা কেমন করিয়া বলিবেন? অতএব কি উপায়ে পাখীকে স্বাধীন অবস্থায় সম্যক্‌ভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে আমাদের আলোচনার বিষয়ীভূত করা যাইতে পারে, তাহার উদ্ভাবন করা আবশ্যক। নব্য সম্প্রদায়ের বিহঙ্গবিৎ বলেন যে, সে উপায় উদ্ভাবিত হইয়াছে;—aviary পরিত্যাগ করিয়া sanctuaryর প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। এই sanctuary শব্দে সহজেই অনুমিত হইবে, পাখীর জন্য যে স্থানটি বিশেষ ভাবে রক্ষিত হইবে, তাহা অত্যন্ত পবিত্র বলিয়া মনে করা চাই। প্রাচীন গ্রীস্ দেশে যেমন কোনও ব্যক্তি মন্দির-মধ্যে আশ্রয় লইলে কেহ তাহার উপর বলপ্রয়োগ করিতে পারিত না, সেই sanctuary তাহাকে রক্ষা করিত; সেইরূপ এই অত্যন্ত আধুনিক bird-sanctuaryর মধ্যে যে কোনও পাখী আসে, কেহ তাহার হিংসা করিতে পাইবে না। একটা প্রকাণ্ড বাগান, নানা বৃক্ষলতাসমাচ্ছন্ন; বাগানের অধিকাংশ গাছের ফল পাখীর আহারের উপযোগী; সবুজ বৃক্ষপত্রান্তরালে তাহারা যথেচ্ছ বিচরণ অথবা বিশ্রাম লাভ করিতে পারে; যেখানে সুবিধা হয় সেখানে নিজ নিজ উপযোগী বাসা নির্ম্মাণ করে; সেই বাগানের মধ্যে জলজ উদ্ভিদশোভিত সরোবর জলচর অথবা উভয় পাখীর জন্য বিরাজ