পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগ
১১৩

নিরীক্ষণ করিবার সুযোগ করিয়া লইল; দেশের ছেলেমেয়েরা পাখীদের জন্য নীড়াধার রচনা করিয়া গাছের ডালে অথবা ঝোপের মধ্যে উহা রাখিয়া অসে; পাখীর আহারসামগ্রী রাখিবার জন্য স্বহস্তে টেবিল তৈয়ারি করিয়া বাগানের মধ্যে লইয়া গিয়া তাহার উপরে বন্য ফল ও শস্যাদি ছড়াইয়া দিয়া এমন স্থানে রাখিয়া আসে যে, অতি সহজেই এই খাদ্য-ব্যাপারের আগাগোড়া তাহাদের চোখে পড়ে।

 নব্যতন্ত্রের অনুষ্ঠিত এই সকল ব্যাপারের উপকারিতা যথোচিত স্বীকার করিয়াও পুরাতন পক্ষিপালকগণ যে যে বিষয়ে তাঁহাদের চেষ্টার সার্থকতা এবং ইঁহাদের ত্রুটি ও বিচ্যুতি দেখা যায় তাহা খুব স্পষ্টভাবে প্রচার করিতে এখনও কুণ্ঠিত বোধ করেন না।

* * * * *

 পাখীর আশ্রমের উপকারিতা সম্বন্ধে সাধারণতঃ যে সকল কথা বলা হয়, তাহা অবশ্যই এখনও বিচার করিয়া দেখা হয় নাই, কেবল সেই কথাগুলিই পাঠকবর্গকে সংক্ষেপে শুনাইবার চেষ্টা করিয়াছি। কেহ যেন মনে না করেন যে, আশ্রম কিংবা খাঁচার দলের মধ্যে একটা বিরোধ অথবা প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। উভয়েরই লক্ষ্য এক,—পাখীর সম্বন্ধে মানবের জ্ঞান যথাসাধ্য প্রসারিত করা। আদিম যুগে মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের প্রথম অবস্থায়, বনে, জঙ্গলে, মাঠে, ঘাটে পাখীর সঙ্গে মানুষের কি সম্বন্ধ ছিল, তাহা আমাদের এখন আলোচ্য বিষয় নহে। তবে সমাজবদ্ধ মানবের পৌর ভবনে সেই সকল পূর্ব্বপরিচিত বন্য বিহঙ্গের অনেকগুলি আশ্রয়লাভ করিয়া নানা প্রকারে জীবনযাত্রা নির্ব্বাহ করিতে লাগিল। তখন হইতে মানবাবাসে পাখীর জন্য খাঁচা ও বাসযষ্টির আবশ্যকতা অনুভূত হইয়াছিল। যে বন্য বিহঙ্গের সহিত মানুষ পূর্ব্বে সম্যক্‌রূপে পরিচিত