পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগ
১১৫

স্বাধীনতা দেওয়া হউক, তাহা হইলেই তাহার যথার্থ স্বরূপ জানিতে পারা যাইবে,—ইহার মূলে কতটা সত্য নিহিত আছে ভাবিয়া দেখিলে এমন অনেক কথা আসিয়া পড়ে, যে সম্বন্ধে পাকাপাকি কোনও মন্তব্য করা কঠিন। কয়েকটি প্রশ্ন তুলিয়া যদি পাঠকের উপরে বিচারের ভার দেওয়া যায়, তাহা হইলে বিষয়টির গুরুত্ব সহজেই উপলব্ধি করা যাইবে:—(১) মানবাবাসে খাঁচার মধ্যে আবদ্ধ অবস্থায় থাকিয়া কোনও কোনও পাখী কি প্রকৃতিদত্ত স্বীয় বর্ণ হারাইয়া একটা সম্পূর্ণ নূতন বা নূতনে পুরাতনে মিশ্রিত কোনও বিচিত্র বর্ণ প্রাপ্ত হয়? (২) যদি কোনও কোনও ক্ষেত্রে অনুকূল অবস্থা বশতঃ এইরূপ হইতে দেখা গিয়া থাকে, তাহা হইলে বিশেষ অনুসন্ধানের বিষয় এই যে প্রকৃতির মুক্ত প্রাঙ্গণে এরূপ বর্ণবিপর্য্যয় সঙ্ঘটিত হয় কি না? (৩) Melanism অথবা অসিত-বরণ-প্রাপ্তিপ্রবণতা এবং albinism অথবা সিতবরণ-প্রাপ্তিপ্রবণতা যে বন্য অবস্থায় পক্ষিজাতির মধ্যে আদৌ অপ্রতুল নহে, একথা কেহ অস্বীকার করিতে পারেন কি? (৪) Hybridism বা বর্ণসাঙ্কর্য্য যে খাঁচার পাখীর একচেটিয়া নহে, তাহা পক্ষিতত্ত্বজ্ঞ মাত্রেই অবগত আছেন কি? (৫) খাঁচার পাখী অনেক সময়ে মানুষের গীতবাদ্য অথবা অন্য পক্ষীর কণ্ঠস্বর যেমন অনুকরণ করিয়া থাকে, স্বাধীন অবস্থায়ও সেইরূপ করিতে দেখা যায় না কি?

 এখন যদি বিচার করিয়া দেখা যায় তাহা হইলে ইহা সহজেই বুঝিতে পারা যায় যে, খাঁচার সাহায্যে মানবালয়ে পক্ষিপালন-প্রথা যুগ-যুগান্তর ধরিয়া চলিয়া আসিতেছে বলিয়া তাহার বর্ণ, স্বর, বর্ণসাঙ্কর্য্য প্রভৃতি সম্বন্ধে আমাদের যে জ্ঞান সঞ্চিত হইয়াছে, তাহারই সাহায্যে আমরা অবস্থান্তরে স্বাধীন বন্য বিহঙ্গের বর্ণ, স্বর ও বর্ণসাঙ্কর্য্যের বিষয়ে সম্যক্ আলোচনা করিতে সমর্থ হইয়াছি। পক্ষিবিজ্ঞান-শাস্ত্রে এইরূপ সাধনার ফলে সুধীগণ অনেকগুলি data লইয়া নানা দিক্