পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৩
পাখীর কথা

হইতে পাখীর জীবনরহস্য-যবনিকা উদ্ঘাটিত করিবার প্রয়াস পাইতেছেন। সেই সমস্ত dataর যাথার্থ্য বৈজ্ঞানিক কষ্টিপাথরে পরীক্ষা করিবার জন্য যদি একদল নবীন তত্ত্বজিজ্ঞাসু “আশ্রমের” কথা তুলিয়া থাকেন, তাহাতে avicultureএর—পিঞ্জরস্থ-পক্ষিপালনের—অগৌরব কিছুই নাই। কারণ, পিঞ্জরে পাখী পোষার ব্যবস্থা না থাকিলে মানুষের পক্ষে পাখীকে ভাল করিয়া পর্য্যবেক্ষণ করা সম্ভবপর হইত না। পাখীকে মানুষের আলয়ে রাখায় শুধু যে সে একটা আনন্দের উপাদান হইয়া আছে তাহা নহে; সে আমাদের অনেক অজ্ঞতা ও ভ্রান্ত বিশ্বাস দূর করিয়া আমাদের জ্ঞানের পথ এমন ভাবে প্রসারিত করিয়া দিয়াছে যে, মানব-সভ্যতা-বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে পক্ষিপালন-প্রথা অথবা avicultureএর ক্রমোন্নতি হইয়া আসিতেছে। এখন যদি এমন অবস্থা দাঁড়াইয়া থাকে যে পিঞ্জরের মধ্যে অথবা গৃহবলভিতে আশ্রিত পক্ষী সম্বন্ধে যত কিছু জানা সম্ভবপর তাহা জানা হইয়াছে, যুগ-যুগান্তর ধরিয়া যে ভাবে aviculture করিয়া আসা হইতেছে তাহার চরম পরিণতিতে আর কিছু নূতন তত্ত্ব আবিষ্কৃত হইবার সম্ভাবনা নাই, তাহা হইলে তত্ত্বজিজ্ঞাসা অবশ্যই একেবারে প্রতিহত হইয়া যে স্তব্ধ হইয়া পড়িবে এমন নহে;—নিশ্চয়ই কোনও নূতন পথ অবলম্বনে পক্ষিজীবনের বিচিত্র ইতিহাস অভিনব উপায়ে পর্য্যালোচনা করিবার চেষ্টা হওয়া বিস্ময়ের বিষয় নহে। এরূপ না হইলেই অন্যায় হইত; বিজ্ঞান-শাস্ত্রের ইতিহাসে সর্ব্বত্রই এই ভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষিত হইয়া আসিতেছে; কেহ কোথাও কখনও নিশ্চল হইয়া দাঁড়ায় না; সমস্যা যতই জটিল হউক না কেন, নানা দিক্‌ হইতে তাহার উপর রশ্মিপাত করিতে পারিলে খাঁটি সত্য পাওয়া যাইতে পারে। এখন দেখিতে হইবে যে, বিহঙ্গতত্ত্ব-জিজ্ঞাসা যে রেখা ধরিয়া এতদিন চলিয়া আসিয়াছে, আজ কি তাহার এমন চরম সফলতা হইয়াছে, অথবা অত্যন্ত করুণ নিষ্ফলতা প্রকাশ পাইয়াছে